ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ভোট উৎসব 

প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রার্থীরা 

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী 

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ২ জুন ২০২৩; আপডেট: ১৬:২২, ২ জুন ২০২৩

প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে প্রার্থীরা 

প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা চার প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতীক পেয়েই উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটের প্রচারে নেমেছেন। 

শুক্রবার (২ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন।

প্রথমে সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। কোনো প্রার্থী একাই কোনো প্রতীক চাইলে তাঁকে সেটি দেওয়া হয়। তবে কোনো প্রতীক একাধিক প্রার্থী চাইলে লটারি করা হয়। লটারিতে যে প্রার্থীর নাম ওঠে, সেই প্রার্থী পছন্দের প্রতীক পান।

প্রতীক বরাদ্দের দিনে প্রার্থীরা সকাল থেকেই তাদের সমর্থকদের মিছিল নিয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আসেন। প্রতীক পেয়ে আবার তারা স্লোগান দিতে দিতে ফিরে যান। অনেক প্রার্থীর সমর্থকদের এ সময় ভুভুজেলা বাঁশি বাজাতে দেখা যায়। দেখা যায় উৎসবমুখর পরিবেশ।

সব শেষে প্রতীক বরাদ্দ করা হয় মেয়র প্রার্থীদের। প্রথমে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ বরাদ্দ করা হয়। এরপর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলমকে ‘হাতপাখা’, জাকের পার্টির প্রার্থী একেএম আনোয়ার হোসেনকে ‘গোলাপ ফুল’ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপনকে ‘লাঙল’ প্রতীক বরাদ্দ করা হয়।

প্রতীক বরাদ্দের পর তাঁদের সমর্থকেরা মিছিল করেন। এছাড়া সারা শহরে পোস্টার ও ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু হয়। প্রতীক বরাদ্দের দিন সকালে শহরের কোথাও কোথাও প্রার্থীদের পোস্টার দেখা যায়।

প্রতিক বরাদ্দ পেয়ে প্রতিক্রিয়ায় সব প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে মন্তব্য করেন। জাকের পার্টির প্রার্থী একেএম আনোয়ার হোসেন বলেন, ইভিএমে ভোট হবে, কিন্তু এখনো ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে না। কীভাবে এতে ভোট দেওয়া হবে, সেটা আমাকেও প্রার্থী হিসেবে জানানো হয়নি। এটা নিয়েই আমার শঙ্কা যে, সবাই ঠিকঠাক ভোট দিতে পারবে কিনা।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। আমার মনে হয় ভালোই থাকবে। ভালো থাকলেই সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসবে। নির্বাচন কেমন হবে, সেটা এখনো বলতে পারছি না। এখনো পর্যন্ত আমার কোনো অভিযোগ নেই। অনেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। আমরা সেটা বলতেও চাই না। আমরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করব না।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আজ প্রতীক পেলাম। এখন আমাদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে।

এদিকে প্রতীক বরাদ্দের আগে খায়রুজ্জামান লিটন জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর প্রতীক পেয়ে তিনি নগরীর সিএনবি মোড়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি হযরত শাহ মখদুম (র.) দরগা মসজিদে নামাজ আদায় করে সেখানে মাজার জিয়ারত করেন। পরে মুসল্লিদের সঙ্গে জনসংযোগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন।

এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন লিটন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী একটি দল। নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিকাশ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। নির্বাচন আসলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত আনন্দিত ও খুঁশি হয়, সারাদেশের মানুষকে নিয়ে একটি আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আজকে নির্বাচনে প্রতীক নিলাম, এটার মাধ্যমে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের নেতাকর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। আমি খুবই আশাবাদী এই নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করবো।

তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থকরাও ভোটাদের নিয়ে আসেন। আমি মনে করি এই নির্বাচনে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট কাস্ট হতে পারে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনের ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারাও দেখছেন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করছি।

আগামী ২১ জুন রাসিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মেয়র পদে চারজন ছাড়াও ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের জন্য ১১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ করা হবে ইভিএমে।

 এসআর

×