ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকাসহ জেলায় জেলায় বিএনপির সমাবেশ

যুগপৎ আন্দোলনের আজ চতুর্থ কর্মসূচি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

যুগপৎ আন্দোলনের আজ চতুর্থ কর্মসূচি

আজ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি সারাদেশে

আজ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের চতুর্থ কর্মসূচি সারাদেশের সকল সাংগঠনিক বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবি ও ২৫ জানুয়ারিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা ২টায় সমাবেশ করবে বিএনপি। সমমনা অন্য দলগুলোও নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে।

এ সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ছে বিএনপি। দলের সিনিয়র নেতাদের বিভিন্ন বিভাগের সমাবেশ সফল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগ মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণা অনুসারে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করা হয় দুই দফায়। প্রথম দফায় ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ছাড়া সকল মহানগর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো।

ওইদিন রাজধানীতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় পালন করা হয় গণমিছিল কর্মসূচি। আর ওই কর্মসূচি পালন শেষে ঘোষণা করা হয় যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি গণঅবস্থান। ওই ঘোষণা অনুসারে ১১ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশের সকল বিভাগে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলগুলো। আর সর্বশেষ ১৬ জানুয়ারি যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় কর্মসূচি সারাদেশের সকল মহানগর ও উপজেলায় সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। আর ১৬ জানুয়ারি সমাবেশ মিছিল কর্মসূচি শেষে ঘোষণা করা হয় চতুর্থ কর্মসূচি- সকল বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ। 
যে ১০ দফা দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যুগপৎ আন্দোলন করছে তার মধ্যে রয়েছে- ১. জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ। ২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন। ৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পর বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন।

সেই নির্বাচন কমিশন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা। ৪. খালেদা জিয়াসহ বিরোধীদলীয় সব নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি। দেশে সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা।

সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা। স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করা। ৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সকল কারও আইন বাতিল করা। ৬. গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল। ৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা। ৮. ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ারবাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন। দুর্নীতি চিহ্নিত করে দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাংচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। ১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করা।

×