ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঢাকার দিনরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২ জুন ২০২৫

ঢাকার দিনরাত

সড়ক, রেলপথ ও নৌপথে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদযাত্রা

৭ জুন শনিবার দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্নের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। ঈদের চার দিন আগে থেকে রাজধানীতে পশুর হাট বসে। ঈদের দিনও কোরবানির পশুর কেনাবেচা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি পশু বিক্রি হয়ে আসছে ঈদের আগের দিন।

ঢাকা ছাড়ছেন কোটি মানুষ

সড়ক, রেলপথ ও নৌপথে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঈদযাত্রা। যদিও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। মূলত ওই দিনেই ঢাকা ছাড়বেন বেশির ভাগ চাকরিজীবী। এতেই চাপ পড়বে সড়কে। ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট সড়কসহ ১৫৯ স্থানে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এতেই যানজট ও ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। এখন সড়কে খানাখন্দ ও অটোরিক্সার দৌরাত্ম্য। কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকার আশুলিয়ায় চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ, খানাখন্দ ও অটোরিক্সার দৌরাত্ম্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।

এর ওপর যোগ হয়েছে পশুবাহী ট্রাক ও ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপ। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির ঈদ বর্ষা মৌসুমে হওয়ায় আশুলিয়া থেকে বাইপাইল পর্যন্ত সড়কটিতে খানাখন্দ আর জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবহনগুলোকে। ফলে ঈদের দুই থেকে তিন দিন আগে একদিকে পশুবাহী ট্রাক ও অন্যদিকে শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত যাত্রীদের নিয়ে সাধারণ পরিবহনগুলোকে পড়তে হবে তীব্র যানজটে।
তবু ঈদে দেশের টানে, পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য এককালে ঢাকায় এসে বসত গড়া কোটি মানুষ পথের ঝক্কি-ঝামেলা বিড়ম্বনা থাকা সত্ত্বেও খুশিমনে ঢাকা ছাড়েন। আর কয়েকটা দিন ঢাকা তার চিরচেনা ছন্দ হারায়। ঢাকা ফাঁকা হয়ে যায়।
সংবাদপত্রের ঈদের আগে শেষ অফিস আগামীকাল বুধবার। এবার পুরো পাঁচদিন ছুটি পেয়েছেন সাংবাদিকরা। তবে পত্রিকা বের না হলেও অনলাইন খোলা থাকায় বহু সাংবাদিককে ঈদের ছুটির মধ্যে, এমনকি ঈদের দিনেও কাজ করতে হবে। এটাই স্বাভাবিক। যেমন কাজ করতে হয় গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি এবং সুপারশপের খাদ্য সরবরাহ প্রতিষ্ঠানসমূহকে।

গাছ রক্ষায় গণ-আদালত

গাছ রক্ষায় গণআদালত, বিষয়টি কিছুটা অভিনবই বটে। রাজধানীর পান্থকুঞ্জ উদ্যান জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত এবং সেখানে গাছ রক্ষা আন্দোলনকারীদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন গণ-আদালত। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পান্থকুঞ্জে জনসাধারণের অবাধ প্রবেশ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে গণস্বার্থ বিষয়ে এটি ছিল প্রথম গণ আদালত। শুক্রবার বিকেলে পান্থকুঞ্জের উত্তর প্রান্তে অনুষ্ঠিত গণ-আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ গাছরক্ষা আন্দোলন ‘পান্থকুঞ্জ মোকদ্দমা: জনগণ বনাম অন্তর্বর্তী সরকার’ শীর্ষক এই গণশুনানির আয়োজন করে।
আদালতের এজলাসের মতোই লাল সালু কাপড়ে আচ্ছাদিত বিচারকদের মঞ্চ, সাক্ষীদের কাঠগড়া, বিচারমঞ্চের উভয় পাশে বাদী ও বিবাদীপক্ষের আসন এবং সামনে দর্শকদের আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাদীপক্ষ উপস্থিত থাকলেও বিবাদীপক্ষে কেউ ছিলেন না। তাদের আসনগুলো খালিই ছিল। বিবাদীরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সেতু বিভাগের নির্বাহী পরিচালক (সচিব), পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প পরিচালক।
আমিরুল রাজিব জানান, গাছ রক্ষা আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো বেসরকারি সংস্থা নয়। প্রাণ পরিবেশ প্রকৃতি ও অধিকার আদায় নিয়ে যারা কাজ করে, তাদের একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম। গত ১৬৮ দিন থেকে তাঁরা পান্থকুঞ্জে অবৈধভাবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নির্মাণ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করছেন। এখানে প্রায় দুই হাজার গাছ কাটা হয়েছে। বহু পাখি, পতঙ্গের আবাস ধ্বংস হয়েছে। আশপাশের এলাকা মানুষের এই মিলনস্থল, প্রাতঃভ্রমণের জায়গাটি বিনষ্ট করা হচ্ছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে প্রধান বিচারক গীতি আরা নাসরিন বলেন, বাদীপক্ষ ১২টি সংযুক্তির মাধ্যমে তাদের অভিযোগের প্রমাণাদি উপস্থাপন করেছে। বৈষম্যমূলক চুক্তি এবং জনস্বার্থবিরোধী প্রকল্প দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। 

ব্যস্ত সড়কে বড় গর্ত

সাতমসজিদ সড়কের মাঝখানে হঠাৎ বড় গর্ত তৈরি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টিকে ‘রহস্যজনক’ বলছিলেন অনেকে; গর্তের কারণ হিসেবে হাজির করেন নানা ব্যাখ্যা। অনেকে বলেন এটা সিংকহোল। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ওয়াসার পানির লাইনের লিকেজের কারণে মাটি সরে গিয়ে বিশাল গর্ত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে সাত মসজিদ রোডের শংকর ফুটব্রিজের কাছে ওই ঘটনার পর ১০ ঘণ্টার মত সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। রাতেই বালি ও ইট-খোয়া দিয়ে গর্ত ভরাট করা হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ডিপিডিসির পুরো ধানমন্ডি এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড করার প্রজেক্ট চলে। এই প্রজেক্টের আওতায় রাস্তার এক পাড় থেকে আরেক পাড়ে লাইন নিয়েছে শংকরের আগে। কোনো রাস্তা না কেটে মাটির নিচ দিয়ে ড্রিল করে করেছে। এতে ওয়াসার খাবার পানির লাইনের কোনো এক জায়গায় লিকেজ হয়েছে।
যাহোক, সিংকহোল হলো হঠাৎ ধসে যাওয়া একটি গর্ত, যা মাটির নিচে ফাঁপা জায়গা তৈরি হলে এবং ওপরের স্তর ভেঙে পড়লে ঘটে। মনে হয় যেন রাস্তা হঠাৎ করেই গিলে ফেলছে মাটি। কেন হয় সিংকহোল? দুটো কারণ বলা যাক।
১. ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেলে মাটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
২. ড্রেন বা পানির পাইপ লিক হয়ে মাটি ধুয়ে গিয়ে ফাঁপা হলে।

ঢাকার নবাবদের দরিয়া-ই-নূর

১১৭ বছর ধরে সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত ঢাকার নবাব পরিবারের ঐতিহাসিক হীরকখণ্ড ‘দরিয়া-ই-নূর’-এর প্যাকেট খুলে দেখতে যাচ্ছে সরকার। প্যাকেটে থাকা দরিয়া-ই-নূরসহ নবাব পরিবারের মোট ১০৯ ধরনের রতœালংকার ব্যবস্থাপনায় ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়। এক সপ্তাহ আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সভাপতি করে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন শাখা। প্যাকেটে যেসব রতœালংকার থাকার কথা, তা প্যাকেটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।
ভূমি সংস্কার বোর্ডের ‘কোর্ট অব ওয়ার্ডস: ঢাকা নবাব স্টেটের ইনডেনচারের’ বিবরণ অনুযায়ী ওই ১০৯ ধরনের রতেœর মূল্য ১০ লাখ ৯ হাজার ৮৩৫ রুপি। নথিপত্র বলছে, যেগুলোর মধ্যে হীরকখণ্ড দরিয়া-ই-নূরের মূল্যই ৫ লাখ রুপি। দামের দিক থেকে দরিয়া-ই-নূরের পরেই রয়েছে একটি হীরার তারা। এতে ৯৬টি মুক্তা রয়েছে। এটি একসময় ফ্রান্সের সম্রাজ্ঞীর মালিকানাধীন ছিল বলে নথিপত্রে উল্লেখ রয়েছে। এর মূল্য ৯৬ হাজার রুপি।
হীরার তারার পরেই রয়েছে পান্না পাথর খোদাই করা হীরার বাজুবন্ধ, যার মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার রুপি। এরপরেই রয়েছে রুবি পাথর এবং হীরার একটি অলংকার, যা নারীরা মাথায় পরেন। এটিকে ‘রোজ অব করসিকা’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যার মূল্য ছিল ৪৮ হাজার রুপি। নিয়ম অনুযায়ী দরিয়া-ই-নূরসহ নবাব পরিবারের ব্যবহৃত ১০৯ ধরনের বন্ধকি রতœ দেশভাগের আগে ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, মুক্তিযুদ্ধের আগে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সোনালী ব্যাংকের ভল্টে রাখা হয়। সেই থেকে মূলত অন্ধকার কুঠুরিতেই পড়ে আছে বাংলার হীরা দরিয়া-ই-নূর।

ঈদে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা 

আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অথবা ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণের কোনো পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সম্প্রতি গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বরাত দিয়ে জানানো হয়, ঈদের পর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে সেনাবাহিনী সহায়তা করবে। এসব প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে সেনাবাহিনী।
বিষয়টি নিয়ে আমার বন্ধু বিখ্যাত সাংবাদিক আনিস আলমগীরের পোস্টের কিছু অংশ পাঠকদের জন্য শেয়ার করছি।  তিনি লিখেছেন: ‘প্রথমবারের মতো কোরবানির ঈদের বর্জ্য পরিষ্কারে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। অথচ সেনাবাহিনী সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, তাদের এমন কোনো কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা নেই। এখন প্রশাসক বলছেনÑ ‘ভুল বোঝাবুঝি’! কিন্তু বিষয়টা এত সরল নয়। কারণ তার দেওয়া বক্তব্য টেলিভিশনে প্রকাশিত, রেকর্ডকৃত।

১৯ মে দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানে প্রশাসক এজাজের বক্তব্য ছিল এ রকম, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা সেনাবাহিনীকে এবার কাজে লাগাব। দিস ইজ দ্য ফার্স্ট টাইম দে উইল বি ডিপ্লয়।’এটি কেবল ভুল ব্যাখ্যা নয়, এটি দায়িত্বহীন, বিভ্রান্তিকর এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকার নগ্ন চেষ্টা। একজন নগর প্রশাসক, যিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন, তিনি নিজের অযোগ্যতা আড়াল করতে দেশের সেনাবাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চান, এটা কি কেবল কৌতুক না গভীর উদ্বেগের বিষয়?’  
ক্স বৃহস্পতিবার জাপানের রাজধানী টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে ৩০তম নিক্কেই ফোরামে ‘ফিউচার অব এশিয়া’-এর উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে ফোরামের প্রশ্নোত্তর পর্বে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে বলছি, নির্বাচন এ বছরের শেষে ডিসেম্বরে অথবা সর্বোচ্চ আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।’ তবে কিছু রাজনীতিবিদ নির্বাচনের জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা কেন, ডিসেম্বেরই নির্বাচন কেন নয়, সেই প্রশ্ন তুলছেন। দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়, শুধু একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ক্স গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকার সমর্থক দুই-তিনটি দল ছাড়া সবাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। তাছাড়া নির্বাচনের জন্য কেন আগামী বছর জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, সরকার তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। নির্বাচন বিলম্বিত করার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
ঢাকার বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা

ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। জনকণ্ঠ বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পুরো পাতা সচেতনতা ও সুপারিশধর্মী অভিমতও প্রকাশ করেছিল কয়েক বছর আগে। মুশকিল হলো পরিকল্পনা ও আন্তরিকতার অভাব থেকেই যাচ্ছে। ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক নিয়ে আগে মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) তৈরি করতে হবে। কিন্তু মাস্টারপ্ল্যান তৈরি না করেই বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করা হচ্ছে। তাই কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেও এর সুফল পাচ্ছেন না ঢাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রচ- বৃষ্টির ভেতর জরুরি প্রয়োজনে ধানমন্ডি এলাকায় যেতে হয়। নিজ চোখে ফিবছরই দেখে আসছি ঢাকায় একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ধানমন্ডি ২৭ নম্বর এলাকা তলিয়ে যায়। সারবাঁধা বিকল সিএনজি অটোরিক্সার দেখা মেলে। এবার বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই নি¤œচাপের প্রভাবে যে চিত্র দেখলাম ২৭ নম্বরে, তাতে শঙ্কিত হচ্ছি। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে যানবাহন আটকে পড়তে পারে, বাণিজ্যিক, আবাসিক এলাকায় পানিও জমতে পারে।

যদিও এবার বিগত বছরের তুলনায় তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি। এর পরও এখনো অনেক এলাকা থেকে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারছে না। সড়কে পানি জমে থাকছে। ফলে দীর্ঘক্ষণ বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোসহ সব ধরনের যান আটকা পড়ছে। নিউমার্কেট এলাকার যে ছবি এবারের সপ্তাহের নির্বাচিত ছবি হয়েছে, সেটি দেখলে বাস্তবতা অনুমান করা যায়। ছবিটি ডেইলি স্টার থেকে নেওয়া।
বিশেষজ্ঞমহল বারবার বলে আসছেন, মূলত খালগুলো উদ্ধার করা ছাড়া ঢাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা পুরোপুরি কাটবে না। কথা হচ্ছে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব কার- এ নিয়েও বছরের পর বছর ‘যুদ্ধ’ চলেছে। একসময় ঢাকার খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও উদ্ধার করার দায়িত্ব ছিল ঢাকা ওয়াসার। তারা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ওয়াসার কাছ থেকে সেই দায়িত্ব অর্পণ করে দুই সিটি করপোরেশনকে। তারা খাল উদ্ধার ও সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও কোনো খাল উদ্ধার হয়নি। এখন ভাবতে হবে সামনের দিনগুলেঅর কথা।

১ জুন ২০২৫
[email protected]

×