
শুরু হলো মহান বিজয়ের ও গৌরবের মাস ডিসেম্বর । দীর্ঘ নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাখ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা চূড়ান্ত হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে নিজস্ব ভ‚খÐ আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা অর্জিত হয় এই দিনে।
দীর্ঘ অপেক্ষিত স্বপ্নের স্বাধীনতা অর্জনের মাস হওয়ায় ডিসেম্বর যেমন আমাদের জাতীয় জিবীনের সবচেয়ে আনন্দের মাস ঠিক তেমনি এই অর্জন লাখ লাখ শহীদের প্রাণ এবং মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে হওয়ায় এই মাস বেধনাবিধূর শোকেগাথা ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে ঘুমন্ত নিরস্ত্র নিরীহ বাঙালির উপর নির্মম গণহত্যা চালায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। সে রাতেই পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষ ঝাপিয়ে পরে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে। মার্চ থেকে শুরু হওয়া সশস্ত্র যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ হানাদারদের গুলিতে অকাতরে বিসর্জন দেন নিজের প্রান।
হানাদার আর রাজাকারের নৃশংস পৈশাচিক নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বাংলার মানুষ, মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয় শিশু থেকে বৃদ্ধ, সম্ভ্রম হারায় মা-বোনেরা। সর্বউচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেও মাতৃভ‚মি রক্ষার লড়াইয়ে শেষ অবধি লড়ে যান বাংলার সোনার ছেলে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা।
এই নির্মমতা বহুমাত্রায় বৃদ্ধি পায় ডিসেম্বর মাসে। পরাজয় উপলব্ধি করতে পেরে পাক বাহিনী, রাজাকার, আল-বদর,আল-শামসের সমন্বয়ে দেশের মেধাবী সন্তান বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে নৃশংস গণহত্যা চলানো হয় দেশকে মেধা শূন্য করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। তবে অকুতোভয়ী সাহসী মুক্তি সেনাদের শক্ত প্রতিরোধ, মুহুর্মুহু গেরিলা আক্রমণ এবং যৌথবাহিনীর জলে-স্থলে আর আকাশপথের সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বিজয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পরে প্রতিটি বাংলাদেশীর মনে, ত্যাগ কিংবা হারানো কষ্ঠে নয় বিজয়ের আনন্দে চোখে জল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে প্রতিটি মানুষ ।
মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মাস। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও জাতীয়ভাবে সারা দেশে যথাযথ মূল্যায়নের সাথে পালিত হবে মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বরÑ এই প্রত্যাশা।
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়