ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমুজ্জ্বল স্বাধীনতা

-

প্রকাশিত: ২০:২৯, ২৫ মার্চ ২০২৩

সমুজ্জ্বল স্বাধীনতা

সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫২তম বছরটি এসেছে আলোকিত ও উন্নত বাংলাদেশের ব্যতিক্রমী বার্তা নিয়ে। ইতোপূর্বে পালিত হয়েছে মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে মুজিববর্ষ- বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতার সূর্য উঠবেই, উঠেছেও। বিজয় নিশানও উড়ছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে, ঘরে ঘরে,  আকাশে-বাতাসে সর্বত্র। কেননা, স্বাধীনতা অমলিন, চিরদিন, চিরকালের। 
২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস। একটি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দিন বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়। এর জন্য এ দেশের মানুষকে দীর্ঘ নয় মাস পাকবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করতে হয়েছে। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের ধারাবাহিকতায় যে অর্জনগুলো ক্রমশ দৃশ্যমান হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম স্বপ্নের পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর প্রভৃতি।

এর বাইরেও বাস্তবায়ন হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম, মোংলার পাশাপাশি পায়রা ও মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে দেশ। গার্মেন্টস রপ্তানিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। রপ্তানি আয়ও ক্রমবর্ধমান। বেড়েছে প্রবাসী আয়।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারায় মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ ডলার। সর্বোপরি বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু- ৭২ বছরের বেশি। এসবই বলতে হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুফল। জাতিসংঘ কর্তৃক ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে উন্নয়নশীল দেশের, যা কার্যকর হবে ২০২৬ সাল থেকে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের এই ভয়াবহ তা-ব চলে সারারাত। এই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানম-ির ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পূর্বক্ষণে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। মূলত ২৬ মার্চ প্রত্যুষেই শুরু হয় বাংলার গণমানুষের সশস্ত্র প্রতিরোধ। ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে এনেছি একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীনতার জন্য এমন আত্মত্যাগ খুব কম জাতিই করেছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। 
স্বাধীনতা দিবসে নানা আনুষ্ঠানিকতা, নানা আয়োজন করা হয়েছে। আমরা এই মহান দিনটিতে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সহকর্মী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী সকল নেতাকে। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের। যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে এ দেশের সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, জীবনপণ শপথ নিয়েছিল তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের সবার।

×