ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতেও চাপে পড়েছেন আশ্রয় নেওয়া আ.লীগ নেতারা

প্রকাশিত: ১৭:১২, ১৮ মে ২০২৫

ভারতেও চাপে পড়েছেন আশ্রয় নেওয়া আ.লীগ নেতারা

ছবি: সংগৃহীত

নিরাপত্তার খোঁজে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী। কিন্তু সেখানেও আর থাকছে না স্বস্তি। ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন ও অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি অবস্থানের মধ্যে এবার দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার পক্ষ থেকেই এসেছে ফেরার নির্দেশ।

দলের একাধিক নেতাকর্মী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারতে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে নতুন করে আলোচনা ও উদ্বেগ। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) কার্যকর হওয়ার পর দিল্লি স্পষ্ট করেছে, বিদেশিদের অবৈধভাবে বসবাস করতে দেওয়া হবে না। এতে করে অনেকে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর মৌখিক সতর্কবার্তাও পেয়েছেন।

ভারতে আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এখানে আর বেশি দিন থাকা সম্ভব নয়। সময় খুবই কম। বড়জোর দু'মাসের মধ্যে ভারত বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে পারে। অনেকেই বলছে, যদি স্বেচ্ছায় না যাই, তবে ভারত সরকার গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠাবে।”

এ অবস্থায় দেশে ফেরা মানে অনেকের জন্য স্বস্তি নয়, বরং নতুন দুঃস্বপ্নের সূচনা। কারণ অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দেশে একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আবার জনরোষ ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতিশোধের আশঙ্কাও রয়েছে প্রবলভাবে।

নেতাকর্মীদের বড় প্রশ্ন— দেশে ফিরলে কি আইনগত সহায়তা মিলবে? তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে কি না, কিংবা পুনর্বাসনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না— এসব বিষয়ে এখনো আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা আসেনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “ভারত সরকার এখন শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাতেই আগ্রহী নয়, বরং নাগরিকত্ব প্রমাণের কঠোর নিয়মও চালু করেছে। ফলে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।”

দলের ভেতরেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, দলের শীর্ষ নেত্রী নিজে দেশ ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও সাধারণ নেতাকর্মীদের মুখোমুখি করছেন চরম অনিশ্চয়তার। কেউ কেউ বলছেন, “যাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, তাদের আর শত্রুর দরকার নেই।”

সার্বিক বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, দেশে হোক কিংবা বিদেশে— আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর সামনে এখন অনিশ্চয়তা আর ভয়ই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।

নুসরাত

×