ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৫ আগস্টের পরে আমরা আবারও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জড়িয়ে গেছি: হাসনাত

প্রকাশিত: ১৯:০৩, ১৭ মে ২০২৫

৫ আগস্টের পরে আমরা আবারও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে জড়িয়ে গেছি: হাসনাত

ছ‌বি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ আবারও এক সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। আদর্শিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের পথে এগিয়ে যাব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা এখন আবারও এক পশ্চাৎমুখী সাংস্কৃতিক সংঘাতের মধ্যে ঢুকে পড়েছি।”

হাসনাত আরও বলেন, “আমরা একটি প্রগতিশীল ধারা তৈরি করতে পারছিলাম, কিন্তু হঠাৎ করেই সেই ধারা থেকে আমরা সরে এসে আবার পিছনের দিকে হাঁটছি। এই নতুন সাংস্কৃতিক সংঘাতে সবচেয়ে ভয়াবহ যে দিকটি প্রকাশ পাচ্ছে, তা হলো—মুসলমান পরিচয়কে ঘিরে একটি হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন এমন একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে যে, আপনি যদি মুসলমান হন, তাহলে অসাম্প্রদায়িক হওয়া আপনার জন্য কঠিন। অথচ অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় বজায় রেখেই অসাম্প্রদায়িক হতে পারছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, “এই সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বটি আমাদের সমাজে একটি বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে—আপনি হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান হয়ে অসাম্প্রদায়িক হতে পারবেন, কিন্তু মুসলমান পরিচয় নিয়ে তা সম্ভব নয়। এটি একটি স্পষ্ট সাংস্কৃতিক বৈষম্য, যা একটি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্ববোধ সৃষ্টি করছে।”

হাসনাত আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “এই ধরনের সাংস্কৃতিক সংঘাতের ভেতর দিয়েই ফ্যাসিবাদের বীজ গোপনে বপন করা হয়। যত বেশি মানুষকে এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রাখা হবে, তত সহজে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ ও আধিপত্য বিস্তার সম্ভব হবে। এর ফলে আমরা শুধু সাংস্কৃতিকভাবে নয়, রাষ্ট্রীয়ভাবে ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ব।”

তিনি সাংস্কৃতিক সহনশীলতা ও সমতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “একটি সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমাদের সব ধর্মের মানুষের পরিচয়কে সম্মান করতে হবে এবং ধর্মীয় পরিচয়কে হীনমন্যতার কারণ না বানিয়ে তাকে ইতিবাচক বৈচিত্র্য হিসেবে দেখতে শিখতে হবে।”

ভিডিও দেখুন: https://www.facebook.com/share/v/1JsCGRRs3V/

এম.কে.

×