ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

ক্ষুধার মাধ্যমে গাজাবাসীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করার একটি পরিকল্পনা: ক্রিস গানেস

প্রকাশিত: ০০:১৯, ১০ মে ২০২৫; আপডেট: ০০:২০, ১০ মে ২০২৫

ক্ষুধার মাধ্যমে গাজাবাসীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করার একটি পরিকল্পনা: ক্রিস গানেস

ছবি আলজাজিরা

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের দ্বিতীয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন ফাউন্ডেশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, যার মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর ভূমিকা বাদ দিয়ে এই উদ্যোগ নেওয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)’ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রক্রিয়া চলছে, যার মাধ্যমে গাজাবাসীদের জন্য খাদ্য, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। ইসরায়েল এ কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল দূত মাইক হাকাবি।

শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। নিহতদের মধ্যে একজন মা ও শিশু আল নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে এবং একজন বাবা ও ছেলে খান ইউনিসে নিহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানান, নতুন এই ত্রাণ কাঠামো গঠন করা হচ্ছে যাতে “সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের” হাতে ত্রাণ না পৌঁছে। তবে এই উদ্যোগকে জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

এপি নিউজের তথ্যমতে, GHF ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাব দিয়েছে যাতে জাতিসংঘের পরিচালিত বিদ্যমান ত্রাণ ব্যবস্থার পরিবর্তে বেসরকারি চুক্তিভিত্তিক সংস্থার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ‘ত্রাণ কেন্দ্র’ স্থাপন করে সেখানে ফিলিস্তিনিদের সমবেত করে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।

এই উদ্যোগকে “এড-ওয়াশিং” বা ত্রাণকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানোর প্রচেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা UNRWA-এর সাবেক মুখপাত্র ক্রিস গানেস। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, “এটি মূলত ক্ষুধার মাধ্যমে গাজাবাসীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করার একটি পরিকল্পনা, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিকতার পরিপন্থী।”

ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রেখেছে। তারা বলছে, যতক্ষণ না একটি নিরাপদ ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, ততক্ষণ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

এই প্রস্তাবিত ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও এর মাধ্যমে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পরিষ্কার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এসএফ

×