
ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ভুল তথ্য ও অপপ্রচারের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ। গতকাল (১ মে) একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে দেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিষ্ঠানটির এক অনুসন্ধান বলা হয়েছে, শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই ড. ইউনূসকে নিয়ে মোট ২৯টি ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে, যা চলতি বছরের অন্য যেকোনো মাসের তুলনায় সর্বাধিক। এর মধ্যে ৮৩ শতাংশ ভুল তথ্য নেতিবাচক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, একই সময় অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নিয়েও ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ড. আসিফ নজরুলকে ঘিরে ৩টি, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে নিয়ে ২টি, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আ ফ ম খালিদ হোসেন ও শেখ বশিরউদ্দীনকে নিয়ে একটি করে এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে নিয়ে একটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।
এপ্রিল মাসেই ইন্টারনেটে মোট ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়, যার মধ্যে জাতীয় বিষয়ে ১০১টি, রাজনৈতিক বিষয়ে ৯৫টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৩৮টি, ধর্মীয় বিষয়ে ২৭টি, এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, বিনোদন, প্রতারণা ও খেলাধুলা। গত মার্চ মাসে ২৯৮টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছিল।
ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান অনুযায়ী, এসব ভুল তথ্যের মধ্যে ১৩৮টি ছিল তথ্যভিত্তিক, ১০৫টি ভিডিওকেন্দ্রিক এবং ৫৩টি ছিল ছবিকেন্দ্রিক। এসবের মধ্যে রিউমর স্ক্যানার ১৮০টি ঘটনাকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা”, ৬৬টি “বিভ্রান্তিকর” এবং ৪৮টি “বিকৃত” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দুটি ঘটনা ছিল কৌতুক বা ব্যঙ্গাত্মক হলেও সেগুলোকে বাস্তব দাবি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল, যার ফলে সেগুলোরও ফ্যাক্টচেক করা হয়।
রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান টিমের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত এসব ঘটনায় তথ্যকেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি ১৩৮টি। এছাড়া ভিডিওকেন্দ্রিক ভুল ছিল ১০৫টি এবং ছবিকেন্দ্রিক ভুল ছিল ৫৩টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ১৮০টি, বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৬৬টি এবং বিকৃত হিসেবে ৪৮টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়া, সার্কাজম বা কৌতুক হিসেবে হাস্যরসাত্মক ঘটনাকে বাস্তব দাবির প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক করা হয়েছে দুটি।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মধ্যে ফেসবুকেই সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সংখ্যার হিসেবে যা ২৭৬টি। এছাড়া ইউটিউবে ৫৪টি, ইনস্টাগ্রামে ৪৮টি, এক্স (টুইটার)-এ ৪৪টি, টিকটকে ২৪টি এবং থ্রেডসে ১৩টি ভুল তথ্যের প্রমাণ মিলেছে। এমনকি ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। এপ্রিল মাসে ১৪টি ঘটনায় মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে আরও দেখা গেছে, গত বছর থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রবণতা বাড়ছে।
সূত্র: রিউমর স্ক্যানার
রাকিব