ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের জন্য ফেসবুকের কাছে এক মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

রোহিঙ্গাদের জন্য ফেসবুকের কাছে এক মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি

ফেসবুক ও রোহিঙ্গা 

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানোয় ফেসবুককে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।

বাংলাদেশে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয়ের আশায় পালিয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে তারা সবাই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযানের শিকার হয়েছে।

ফেসবুকের হোল্ডিং কোম্পানি মেটা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সহিংসতার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছে। রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে।

প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, অনেক রোহিঙ্গা ফেসবুকের ‘রিপোর্ট’ ফাংশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী বিষয়বস্তু রিপোর্ট করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বিদ্বেষপূর্ণ এসব বক্তব্যকে মিয়ানমারে বিপুলসংখ্যক দর্শকের কাছে ছড়িয়ে দিতে এবং পৌঁছানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটি ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত সাড়া জাগানো ‘ফেসবুক পেপারস’-এ উঠে আসা বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। সেখানে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, কোম্পানির নির্বাহীরা জানতেন সাইটটি জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষতিকর বিষয়বস্তু ছড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

মেটার ব্যবসায়িক মডেলই হচ্ছে- সামাজিক মাধ্যমে মানুষকে ব্যস্ত রাখা। ফেসবুকে যে যত বেশি ব্যস্ত থাকবেন তারা তত বেশি স্ক্রলিং করবেন। প্ল্যাটফর্মটি তত বেশি ডেটা সংগ্রহ করবে। এই কারণে, বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টদের কাছ থেকে সতর্কতার প্রতি মেটার প্রতিক্রিয়া ছিল ধীর এবং অপর্যাপ্ত এবং রোহিঙ্গা জনগণের নিপীড়নে সরাসরি অবদান রেখেছিল।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায় তখন থেকে কক্সবাজারে শিক্ষামূলক প্রকল্পে যাওয়ার জন্য এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে - যেখানে সম্প্রদায়টি আশ্রয় নিয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠনিটি সব অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

মেটার দাবি, আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ক্রমাগত কমোডিফাই করা হচ্ছে। আমরা প্রযুক্তি জায়ান্টদের মানুষের দুর্ভোগের চেয়ে লাভকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুমতি দিতে পারি না।

যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলাটি গত ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে দায়ের করা হয়েছিল। সেখানেই ফেসবুক ও এর মূল কোম্পানি মেটার সদর দপ্তর। ওই মামলায় ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে শরণার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, ফেসবুক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল, যার ফলাফল হিসেবে মিয়ানমারে সেনা অভিযানে ১০ হাজারের মত রোহিঙ্গা মুসলমানের প্রাণহানি হয়, আর দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয় আরও কয়েক লক্ষ মানুষ।

ফেসবুক এসব অভিযোগ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি। প্রতিষ্ঠানটির করপোরেট নাম এখন মেটা।
 

 এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×