ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঝোপঝাড়, ডাস্টবিন ফুটপাথে মিলছে জীবিত কিংবা মৃত শিশু

অনৈতিক সম্পর্কে জন্ম নেয়া নবজাতকের করুণ পরিণতি

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অনৈতিক সম্পর্কে জন্ম নেয়া নবজাতকের করুণ পরিণতি

শংকর কুমার দে ॥ অজ্ঞাত পরিচয়ের নবজাতক জীবিত কিংবা মৃত উদ্ধারের ঘটনা ক্রমবর্ধমান। কখনও রাস্তাঘাট, কখনও ঝোপঝাড়, কখনও ফুটপাথ, কখনও বা ট্রেনের বগি, শৌচাগার বা নালা-নর্দমা, এমনকি ডাস্টবিনেও মিলছে সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক। ময়লার ভাগাড়ে, ব্যাগে বন্দী অবস্থায় রাস্তার পাশে, ঝোপঝাড়, যানবাহন, খোলা মাঠ থেকে উদ্ধার হচ্ছে নবজাতক ও নবজাতকের লাশ। এসব নবজাতকের বেশিরভাগই গুরুতর আহত, না হয় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। যেসব শিশু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়, তাদের স্থান হয় নিঃসন্তান কোন দম্পতির পরিবারে, না হয় সরকারী শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে। বড় হয়ে জানতেও পারে না তার জন্ম পরিচয়, কে তার বাবা, কে তার মা ? গত ৬ বছরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২১০টি নবজাতক ও নবজাতকের লাশ। গতবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে উদ্ধার করা হয়েছে ৪২ অজ্ঞাতনামা নবজাতকের মৃতদেহ। পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে। রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার হয়েছে এক নবজাতকের মরদেহ। নবজাতকটির বয়স আনুমানিক এক দিন। হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেছেন, হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকার লেকের পাশ থেকে লাল রঙের শাড়ি পেঁচানো একটি ব্যাগ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনী প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মৃত অবস্থায় কেউ ব্যাগে ভরে মরদেহটি ফেলে রেখে গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এর আগে রাজধানীর শাহবাগের পরীবাগ এলাকার একটি বহুতল ভবনের সামনের ফুটপাথ থেকে মৃত এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নবজাতকের বয়স আনুমানিক এক থেকে দুই দিন হবে। গত ১৮ জানুয়ারি সকালে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কন্যা নবজাতকটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকে পাঠান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া নবজাতকের মৃতদেহটি উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছেন। এরও আগে রাজধানী ঢাকার আজিমপুরে ইডেন মহিলা কলেজের সামনে রাস্তার পাশে ফুটপাথে এক নবজাতকের লাশ পাওয়া যায়। ঢাকার আজিমপুরে ইডেন মহিলা কলেজের সামনে রাস্তার পাশে ফুটপাথে এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা নবজাতকটি কন্যাশিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন লালবাগ থানার এসআই এস এম তারেক আজিজ। শিশুটি একদিন বয়সী বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিশুটি কার এবং কিভাবে এখানে এলো, তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসআই তারেক আজিজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে সকালে ইডেন কলেজের সামনে রাস্তার পাশ থেকে তোয়ালে দিয়ে মোড়ানো নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করি। শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সে আগেই মারা গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক ও নবজাতকের বিষয়ে মামলা করেছে পুলিশ। জীবিত নবজাতকদের দেয়া হয়েছে নিঃসন্তান পরিবার কিংবা সরকারী শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে। মৃত নবজাতকের লাশের করানো হয়েছে ময়নাতদন্ত। ময়নাতদন্তের ওপর ভিত্তি করে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নত দেশের মতো ডিএনএ ব্যাংক নেই। এ কারণে ডিএনএ ম্যাচ করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মৃত নবজাতকদের জন্মদাতা বা জন্মদাত্রী অদৃশ্যই থেকে গেছে। নবজাতকের লাশ পাওয়ার পর জন্মদাতা বা জন্মদাত্রীর খোঁজ করে পুলিশ। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য বলছে, অজ্ঞাত পরিচয়ের মৃত নবজাতকের দেহ রাস্তা, ডাস্টবিন বা ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অবৈধ সম্পর্কের বলি হচ্ছে নিষ্পাপ শিশু। ফুটফুটে শিশুর হাসি দেখে নিষ্ঠুর মানুষের হৃদয়ও কোমল হয়ে ওঠে। লোকে এমনটাই জানে। মা-বাবা তাদের নবজাতক সন্তান কোলে নেয়ার সময় খুব আলতো করে ধরেন যাতে তার গায়ে সামান্য আঁচড়ও না পড়ে। কিন্তু মানব শিশুটিকে মানুষ নামের কিছু ‘নরপশু’ যখন হাসপাতালের বারান্দা, ধান খেত বা আঁস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে, তাকে কুকুর-বিড়ালের মুখে ঠেলে দেয়, নর্দমার ময়লায় ফেলে রাখে তখন গোটা মানবতাই লজ্জিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নবজাতক শিশুদের হত্যা, আঁস্তাকুড় বা নর্দমায় ফেলে দেয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবৈধ সম্পর্কের ফসল হওয়ায় শিশুদের এ করুণ পরিণতির শিকার হতে হচ্ছে। ৯৯৯-এ কল নবজাতক উদ্ধার ॥ গত জুন মাসের ৭ তারিখে বাগেরহাটে রাতের অন্ধকারে চায়ের দোকানের পেছনে থাকা ক্যারামবোর্ডের ওপর রেখে যাওয়া এক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ গতবছরের ৭ জুন ভোররাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার চিতলী-বৈটপুর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া শিশু পুলিশের তত্ত্বাবধানে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসার পর সুস্থ করে তোলা হয় নবজাতক শিশুটিকে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা এদিন দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে গিয়ে নবজাতকটির খোঁজখবর নেন। এদিকে নবজাতককে দত্তক নিতে বাগেরহাট শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে আবেদন করেন একাধিক দম্পতি। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গভীররাতে কান্নার শব্দ টের পেয়ে সাইদুল ইসলামের চায়ের দোকানের পেছনে রাখা ক্যারামবোর্ডের ওপর থেকে শিশুটিকে স্থানীয় ইমরান শেখের স্ত্রী লিজা বেগম উদ্ধার করেন। পরে তারা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে জানায়। পুলিশ নবজাতকটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বিমানবন্দরের জঙ্গল থেকে নবজাতক উদ্ধার ॥ রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বলাকা ভবনের পাশে একটি জঙ্গল থেকে জীবিত এক নবজাতক (কন্যা) সন্তান উদ্ধার করেছে পুলিশ। নবজাতকটি উদ্ধারের পর তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতবছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে নবজাতকটি উদ্ধার করে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিএম রাজিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, বলাকা ভবনের পাশের জঙ্গলে কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনতে পান পরিচ্ছন্নতা কর্মী রেহেনা। পরে তিনি পুলিশকে খবর দিলে সেখান থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। ভুট্টাখেত থেকে ফুটফুটে নবজাতক উদ্ধার ॥ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের মধ্য মোহাম্মদপুর সবেতুল্লা এলাকার ভুট্টাখেত থেকে একটি ফুটফুটে নবজাতককে উদ্ধার করেছেন এক নারী। এ সময় স্থানীয়রা সেখানে উপস্থিত হয়। ওই শিশুটিকে দত্তক নিতে অনেকে চেষ্টা করছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতবছরের মে মাসের ২ তারিখ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের মধ্য মোহাম্মদপুর সবেতুল্লা গ্রামের একটি ভুট্টাখেতের আইলে নবজাতকটি পড়ে থাকতে দেখেন ওই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মিনা বেগম (৩২)। মুহূর্তে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত লোক সেখানে জড়ো হয়। মিনা বেগম ও তার স্বামী শিশুটি উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেয়ে পাটগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুল ইসলাম ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান নবজাতক শিশুসহ ওই উদ্ধারকারী নারীকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে থানার নারী ও শিশু সেলে রাখা হয়। বাউরা ইউনিয়নের বাসিন্দা ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম গণমাধ্যমে বলেন, আমাদের বাচ্চা নেই। ওই নবজাতককে দত্তক নিতে আমরা আগ্রহী। এজন্য পাটগ্রামে এসেছি, কিন্তু এখন জানলাম নবজাতক উদ্ধারকারী ওই নারী তিনি শিশুটিকে দত্তক নিতে চান। পাটগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুল ইসলাম নবজাতক উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছোট্ট শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে থানার নারী ও শিশু সেলে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে উপযুক্ত অভিভাবক পাওয়া না গেলে আইন মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ইউনিসেফ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সর্বোচ্চ নবজাতক মৃত্যু-কবলিত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বাংলাদেশে প্রতিবছর জন্মের পর মারা যায় ৬২ হাজার নবজাতক। এসব শিশুর মৃত্যু হয় জীবনের প্রথম মাসে এবং অর্ধেকই মারা যায় ভূমিষ্ট হওয়ার দিনই। বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অপরিণত অবস্থায় জন্ম, সংক্রমণ এবং ডেলিভারিকেন্দ্রিক জটিলতা থেকে সৃষ্ট পরিস্থিতি। কিন্তু এগুলো অনেক সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না। তাই এসব প্রাণহানির কারণ থেকে যায় অজানা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফেলে দেয়ার পর যেসব নবজাতক ভাগ্যগুণে বেঁচে যায়, তাদের অনেকে নিঃসন্তান মা-বাবার কাছে আদরে বেড়ে উঠছে। সন্তান দত্তক নিতে উৎসুক বহু পরিবার। অন্যদিকে সমাজসেবা অধিদফতরের ছোটমণি নিবাসসহ কিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নিয়ে এসব শিশু লালন-পালন করছে। যে কোন জায়গায় এসব শিশুদের ফেলে দেয়া হচ্ছে। ব্যাগে, বস্তায়, কাপড়ে মুড়িয়ে। কোন শিশুর কান্না মানুষের কাছে পৌঁছালে ভাগ্যচক্রে বেঁচে যাচ্ছে। আর এসব ঘটনায় মামলা হলেও আসামি খুঁজে পাওয়া যায় না। সমাজবিজ্ঞানী, মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, সচেতনতার অভাবে ‘অনাকাক্সিক্ষত’ সন্তান জন্ম নিচ্ছে। পরে লোকলজ্জার ভয়ে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এই সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর তদন্তের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই বিয়ে বহির্ভূত অনেক ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে নারী-পুরুষ। ফলে এই নবজাতকদের জন্ম যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে জীবন্ত শিশুকে ফেলে দিয়ে যাওয়ার ঘটনাও। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার বলেছেন, নবজাতকের লাশেরও ময়নাতদন্ত করতে হয়। তবে উদ্ধার হওয়া সব লাশের ময়নাতদন্ত হয় না। বেশিরভাগ রিপোর্টে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই হত্যার আলামত উল্লেখ করা হয়। এ শিশুগুলো সাধারণত প্রিম্যাচিউরড হয়। শরীরের টিস্যু বা হাড় সংগ্রহ করে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে আমরা সিআইডিতে পাঠাই। তিনি আরও বলেন, নবজাতকদের সঙ্গে ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচ করা আমাদের দেশে অসম্ভব। কারণ আমাদের ডিএনএ ব্যাংক নেই। এটি থাকলে অনেক অপরাধ কমে যেত। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উদ্ধার করা নবজাতকদের ডিএনএ পাওয়া গেলেও তাদের মা-বাবার ডিএনএ স্যাম্পল নেই। তাই পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। পুলিশ সদর দফতরের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কখনও নবজাতকের মা শনাক্ত হলে বেরিয়ে আসে মর্মস্পর্শী ঘটনা। নেহাত বিপদে পড়েই মা তার গর্ভের সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেছেন, অনৈতিক সম্পর্ক থেকে বা অনাকাক্সিক্ষতভাবে যেসব সন্তানের জন্ম হয় তাদেরও বাঁচার অধিকার আছে। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিতে সন্তান দত্তক দেয়ার প্রতিষ্ঠান আছে। নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করা যাবে না। ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে এসব ঘটনায় অমানবিক সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

আরো পড়ুন  

×