ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এক দশকে ১২ খুন

সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি কালাপাহাড়িয়ার সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২৮ জুন ২০২০

সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি কালাপাহাড়িয়ার সাধারণ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ আড়াইহাজারের নদী পরিবেষ্টিত চরাঞ্চল কালাপাহাড়িয়ায় অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। আধিপত্য বিস্তার, মেঘনা নদীর থেকে বালু উত্তোলন, নদীতে চলাচলকারী বালুবাহী বাল্কহেডে চাঁদাবাজি, চরদখল, মাছের ঘের দখলসহ তুচ্ছ ঘটনায় বার বার অশান্ত হয়ে উঠেছে কালাপাহাড়িয়ার পরিবেশ। এসব নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী চক্র। এসব সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো এলাকায়। কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এতে কালাপাহাড়িয়ার নিরীহ এলাকাবাসী দিনদিন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। তারা এখন সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বালু মহাল, মাছের ঘেরসহ বিভিন্ন প্রকৃতিক সম্পদের দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত এক দশকে শুধু কালাপাড়িয়ার কদমীর চরেই খুন হয়েছেন এক ডজনের বেশি মানুষ। সর্বশেষ গত ২৭ মে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কালাপাহাড়িয়ার ছাত্রলীগ সাদ্দাম হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হকের দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আইয়ুব আলী নিহত হয়েছে। স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আড়াইহাজারে চারদিকে মেঘনা নদী পরিবেষ্টিত দ্বীপ অঞ্চল কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন। এর উত্তরপাশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, দক্ষিণে কুমিল্লার মেঘনা থানা, পূর্বে কুমিল্লার হোমনা এবং পশ্চিমে আড়াইহাজার সদর ও সোনারগাঁ থানা। চারদিকে নদী পরিবেষ্টিত হওয়ার কারণে সন্ত্রাসীরা অপকর্ম সংঘটিত করে দ্রুত এসব এলাকায় পালিয়ে যায়। যে কারণে তারা বেশির ভাগ সময় থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আড়াইহাজারে কদমীরচরে আছে জয়নাল, আব্দুস সাত্তার, ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হকের রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। এসব বাহিনীর সদস্যদের হাতে রয়েছে নানা ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গত আট দশ বছরে এসব সন্ত্রাসী নদীতে বালু উত্তোলন, চরদখল, মাছের ঘের দখল, বালুবাহী বাল্কহেডে চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত এক দশকে শুধু কদমীর চরে খুন হয়েছেন- আব্দুস সালাম, লাল মিয়া, আমান, আব্দুর রব, বেতের, মোতা, আব্দুল, হাসুন, আব্দুস সালাম, মধ্যারচরের রোজিনা, সুজন এবং সর্বশেষ অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আইযুব আলী। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই কালাপাহাড়িয়ায় অপরাধ প্রবণতার কথা স্বীকার করে বলেন, অপরাধী অপরাধীই। সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই। অপরাধী ও সন্ত্রাসী আমাদের দলের প্রয়োজন নেই। এরা দলের জন্য বিষফোঁড়া। ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেনের অপকর্মের খবরটি আমাদের কাছে এসেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে ছাত্রলীগ। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা কালাপাহাড়িয়ার অপরাধীরা যে দলেরই হোক তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে বলেছি।
×