ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

ঝলক

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৪ মার্চ ২০১৬

ঝলক

বিশ্বের সেরা চাকরি বিড়াল পরিচর্যা! কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমানে পৃথিবীর সেরা চাকরি কোন্টি? এর উত্তরে বলা হবে, মাইক্রোসফট, গুগল, ফেসবুক অথবা এ্যাপলের মতো টেকজায়ান্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে চাকরি। কিন্তু যদি বলা হয় বর্তমানে পৃথিবীর সেরা চাকরি বিড়াল লালন-পালন অর্থাৎ বিড়ালের আয়ার দায়িত্ব পালন করা। তবে যে কেউ এই কথায় বিশ্বাস করতে চাইবে না। কিন্তু ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার শহরের এক ক্যাট ক্যাফের কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে বিড়াল পরিচর্যাই বিশ্বের সেরা চাকরি। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত চাকরির বিজ্ঞাপনে ক্যাফের মালিক এলি ও সোফি বলছে, বিশ্বের সেরা চাকরি করতে চাইলে আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠান। নির্বাচিত প্রার্থীকে ঘণ্টা মাফিক বেতন দেয়া হবে। ক্যাফে চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত। এতে কাজের একটা ফিরিস্তি দেয়া হয়েছে। কাজসমূহ হলো, বিড়াল খাওয়ানো, বিড়ালকে পরিপাটি করা, এটির সঙ্গে খেলা করা, বিড়ালের সঙ্গে ক্যাফেতে আগত কাস্টমারদের পরিচয় করিয়ে দেয়া, ক্যাফের নিয়মনীতি ব্যাখ্যা করা, বিড়ালের থাকার বিছানা গুছিয়ে রাখা, গোসল করানো, বিড়ালের খেলার জন্য নতুন নতুন খেলনা তৈরির কৌশল বের করা, বিড়ালকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা। ক্যাফের মালিক এলি ও সোফি বলছে, গত বছর আমাদের মাথায় এই ধরনের ক্যাফে প্রতিষ্ঠার বুদ্ধি আসে। আমার মনে হয় এখানে আগতরা ফি দিয়ে বিড়ালের মতো একটি নিরীহ প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবে। এতে ক্রেতারা এক ধরনের নির্মল আনন্দ পাবে। টেলিগ্রাফ অবলম্বনে। এক দিনের প্রধানমন্ত্রী! এই ধরনের ঘটনা সাধারণত স্বপ্ন, সিনেমা, নাটক অথবা সাহিত্যে দেখা যায়। বিষয়টি হলো কোন দেশের এক দিনের রাজা অথবা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসা। চেয়ারে বসামাত্রই দেশটির নানা অনিয়ম-অনাচার দূর করে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করা। কিন্তু এবারের ঘটনাটি পুরোপুরি সত্য। তাও আবার যেনতেন দেশ নয় কানাডার মতো একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসা! সম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত পিজে লাখানপাল নামে এক তরুণ দেশটির এক দিনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দফতরে সে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জন্য রাখা একটি চেয়ারে বসে কেটেছে তার সারাটা দিন। দেখেছে সব কাজকর্ম। তবে এর পেছনের ঘটনাটি একটু বলে রাখা প্রয়োজন। ১৯ বছর বয়সী লাখানপালের আদি বাড়ি ভারতের পাঞ্জাবে। এক ধরনের জটিল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়ছিল ছেলেটি। ক্রমেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসছিল তার। এরপর লাখানপালের সামনে সুযোগ আসে ‘মেক আ উইশ’ নামের এক কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার। এই কর্মসূচীর উদ্দেশ্য মরণব্যাধিতে আক্রান্ত কোন তরুণের শেষ ইচ্ছা পূরণে কাজ করা। আয়োজকদেরও চেষ্টা থাকে আক্রান্তের শেষ ইচ্ছা পূরণে সবকিছু করার। এরপর ছেলেটির কাছে জানতে চাওয়া হয় তার শেষ ইচ্ছার কথা। এ সময় আয়োজকদের উদ্দেশ্যে লাখানপালের ঝটপট উত্তরÑ আমি কানাডার প্রধানমন্ত্রী হতে চাই। এ কথা শুনে আয়োজকদের চোখ কপালে ওঠার যোগাড়। এভাবে আস্তে আস্তে ছেলেটির এই ইচ্ছার কথা পৌঁছে যায় খোদ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কানে। প্রধানমন্ত্রী এই ছেলেটির ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসেন। সুযোগ করে দেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী দফতরে পৌঁছানোর পর ছেলেটিকে সম্ভাষণ জানাতে এগিয়ে আসেন ট্রুডো। শুধু কি তাই? ট্রুডো বলেন, তুমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে চাও তাই না? তোমার সময় কিন্তু শুরু। এরপর লাখানপালের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কানাডার গবর্নর জেনারেল ডেভিড জনসন। ছেলেটির সঙ্গে দেখা করার পর তিনি টুইটও করেন। তাতে লেখেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পিজের সঙ্গে দেখা করে আমি খুশি হয়েছি। তিনিই আমাদের জাতির পরবর্তী নেতা। শুধু কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই নয়, পুরো পাঁচ দিন রাজকীয়ভাবে পুরো পরিবারসহ অটোয়া সফর করে প্রাভোজোত। এর মধ্যে ছিল কানাডার পার্লামেন্ট ভবন পরিদর্শন, সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ, একটি শপথ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মতো পূর্ণ মর্যাদার নিরাপত্তা পাওয়া। ১৯৮৮ সালে ভারতের পাঞ্জাবের শহর মান্দি আহমেদগড় থেকে কানাডায় আসেন তার বাবা। বাবা সুরিন্দার লাখানপালের রয়েছে একটি অটোমেকানিকের দোকান। তিন বছর আগে ক্যান্সার ধরা পড়ে প্রাভোজোতের। এর পর বিমর্ষ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। তবে প্রাভোজোত এক দিনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় দীর্ঘদিন পর হাসি ফোটে পরিবারের মুখে। Ñ টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে
×