ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশ-সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে ভিসা ইস্যুতে অগ্রগতি আনতে দুই দেশের সরকার পারস্পরিক বিশ্বাস ও সদিচ্ছার ভিত্তিতে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
সোমবার তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটির (ICP) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহেইল সাঈদ আল খাইলির সঙ্গে এক দীর্ঘ, খোলামেলা ও আন্তরিক আলোচনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, ইউএই-তে ভিসা ও আবাসন নিয়ম লঙ্ঘনের দিক থেকে বাংলাদেশিরা বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শীর্ষে রয়েছে। বর্তমানে দেশটির মোট আইন লঙ্ঘনকারীদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই বাংলাদেশি নাগরিক।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “এই সমস্যা মূলত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কর্মী নিয়োগ ও বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান অসঙ্গতির ফল। আমাদের দেশে অভিবাসন খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, অথচ বিদেশে যে আয় হচ্ছে তা অনেক সময় সে খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই অসামঞ্জস্য অনেক সময় মানুষকে অনিয়মের পথে ঠেলে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের আগে থেকে এই ধরনের অনিয়মের মূল কারণ সমাধানে দৃশ্যমান তৎপরতা ছিল না। বরং ভিসা নীতির শিথিলতার সময় এসব অনিয়ম আরও বেড়েছে, অথচ সরকারের তরফ থেকে কঠোর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি অংশ অতিরিক্তভাবে জাল সনদপত্র তৈরি করছে, যা অনেক সময় সরকারি সত্যায়নও পেয়ে যাচ্ছে। লুৎফে সিদ্দিকী জানান, স্থানীয় একটি রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির সাথেও এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন এবং তারাও এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন যুগে প্রবেশ করতে হলে উভয় দেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমরা সম্মত হয়েছি, পারস্পরিক বিশ্বাস ও আন্তরিকতার ভিত্তিতে ভিসা সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে।”
লুৎফে সিদ্দিকী জানান, বিভিন্ন ধরনের ভিসা যেমন: পারিবারিক, বৈবাহিক, ভ্রমণ, দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের ও সিফেরারদের জন্য ভিসা—সবগুলো পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, "আমাদের সবাইকে অভ্যন্তরীণভাবে অনিয়ম ও এর মূল কারণ দমন করতে হবে। এইসব সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।"
নোভা
