ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়াতে ইসরায়েলের নতুন ছক!

প্রকাশিত: ০০:১৬, ৮ মে ২০২৫

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়াতে ইসরায়েলের নতুন ছক!

ছবিঃ সংগৃহীত

ইসরায়েলের সরকার গাজার জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে যা বিশ্লেষকদের মতে ফিলিস্তিনিদের জোর করে উচ্ছেদ করা এবং ধ্বংস করার কৌশল। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে লক্ষাধিক মানুষকে জোর করে সরিয়ে দক্ষিণে কয়েকটি ক্যাম্পে ঠেলে দেওয়া হবে। আর খাবার পেতে হলে তাদের থাকতে হবে এই ক্যাম্পেই—না হলে না খেয়ে মরতে হবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, এটি “হামাস ধ্বংস” এবং “জিম্মিদের উদ্ধারের” জন্য। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, গাজার উত্তরের এলাকা ফাঁকা করে দেওয়া হবে। প্রায় ৬টি ক্যাম্প বানিয়ে সেখানে হাজার হাজার পরিবারকে গাদাগাদি করে রাখা হবে। প্রতিটি পরিবার থেকে একজনকে সপ্তাহে একবার অনেক দূরে হেঁটে গিয়ে খাবার আনতে হবে।

এদিকে খাবার পেতে হলে মুখ স্ক্যান করতে হবে – মানে ‘ফেস রিকগনিশন’ প্রযুক্তি দিয়ে মনিটর করা হবে কে খাবার পাচ্ছে। ইসরায়েল বলছে, যাতে “হামাস” কেউ খাবার না পায়। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রায় সব তরুণ ফিলিস্তিনিকেই হামাস সদস্য মনে করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবারকে অস্ত্র বানিয়ে ফিলিস্তিনিদের জোর করে সরানোই আসল লক্ষ্য।
ডায়ানা বুত্তু, একজন ফিলিস্তিনি আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘যদি এই পরিকল্পনাকে শুধু ত্রাণ বিতরণের চোখে দেখেন, এটি বোঝা যাবে না। কিন্তু যদি একে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা হিসাবে দেখেন, তবে এটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার।’

ফিলিস্তিনিরা ক্ষুধার্ত, ভয়ঙ্কর আতঙ্কে এবং ক্লান্ত। একজন ফিলিস্তিনি নূর আয়াশ (৩১) প্রশ্ন করেন, ‘যদি আবার উচ্ছেদের পরিকল্পনা থাকে, তাহলে আমাদের গাজার উত্তরে ফিরে আসতে দেওয়া হলো কেন?’ আরেক ফিলিস্তিনি, নাম, মাহমুদ আল-নাবাহিন (৭৭), যিনি ১৮ মাস ধরে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছেন, বলেন, ‘আমাদের সবকিছু শেষ। স্ত্রী আর মেয়েকে হারিয়েছি, ঘর নেই, জমি নেই। এখন আর কিছুই বলার নেই।’

জাতিসংঘ এই পরিকল্পনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এতে আরও বহু মানুষ মারা যাবে এবং গাজা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হাক বলেন, ‘গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হওয়া উচিত। এই পরিকল্পনা মৌলিক মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে।’

ইসরায়েল দুইটি মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানি ভাড়া করতে চায়—Safe Reach Solutions ও UG Solutions—যাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রাক্তন CIA এবং মার্কিন সেনা অফিসাররা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এরা ভবিষ্যতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় এড়াতে ইসরায়েলের জন্য ‘ঢাল’ হতে পারে।

সূত্রঃ আল-জাজিরা

 

আরশি

×