
এ্যালেন গিন্সবার্গ (৩ জুন, ১৯২৬-৫ এপ্রিল, ১৯৯৭) একজন মার্কিন কবি ও লেখক। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তাঁর বিখ্যাত September on Jessore Road কবিতাটিতে শরণার্থীদের ঢল, চোখমুখে নিজ মাতৃভূমি আর আপনজন ছেড়ে যাবার করুণ হাহাকারসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের এক প্রামাণ্যচিত্র। মূলত স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে প্রখ্যাত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে তিনি শরণার্থী শিবিরগুলো ঘুরে ঘুরে মানবেতর জীবনযাপন দেখে ব্যথিত হয়েছিলেন। উপরোক্ত কবিতাটিকে গানে রূপান্তরিত করে প্রখ্যাত নোবেলজয়ী গীতিকবি ও শিল্পী বব ডিলানসহ কনসার্টের আয়োজন করে বাংলাদেশীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। এজন্য তিনি আমাদের কাছে সুখ্যাত ও প্রিয়জন। তবে গোটা বিশ্বে তিনি তাঁর ঐড়ষি নামক কবিতার জন্য সুখ্যাত। কবিতাটিতে তিনি আমেরিকার পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। পোয়েট্রি ফাউন্ডেশন থেকে সংগৃহীত The Sparrow, Crime Does Not Pay, A Eastern Ballad শীর্ষক কবিতা তিনটি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত হয়েছে।
চড়ুই
জানালার শার্শিপাশে, একদিন সোনালি সকালে
আহত চড়ুই লাফাচ্ছিল একপায়ে, অসম তালে
জিজ্ঞেস করলাম, হলো ক্যামনে এমন মারাত্মক রক্তাক্ত কাজ
বললো, দুনিয়াটা বেঈমান, নিষ্ঠুরদেরই তাই হয়েছে রাজ
জীবন আমার এ মুহূর্তে বিপদের মুখে
তোমরা তো মানুষ, আছো বহুত সুখে
কোথাকার কে আমি, পাট দাও চুকে
মাংসের টুকরো পেতেই জবেহ করেছো গরু, মানুষ
সেখানে নেই ভরসা, ন্যূনতম বা সরু, শুধুই ফানুস
না, দেখো না, নেই কোনো তলোয়ার বা ছুরি
এসে বসো হাঁটুর ’পর, আহত পা হোক জুড়ি
বনে যাই বন্ধু-স্বজন, পাখা মেলে যাই উড়ি
না, দিবো নাকো কোনো সুযোগ, চড়ুইয়ের কথা
মরার থেকে সাবধান থাকা, ঠিক এটি, এটি যথা
গেলোই দূরে, গেলো উড়ে চড়ুই, ঝাপটিয়ে পাখা
আমি নিশ্চিত, ঠিক আওড়াচ্ছে সে, বিদ্বেষ মাখা
পারি যত ঝাপটাই পাখা খুব, যাই বহুদূরে পালিয়ে
মানুষ বিশ্বাস বেলায় একদম চুপ, ছুরি দেয় চালিয়ে
অপরাধের ফল শুভ হয় না
পালালো লেজ গুটিয়ে
ঐ উচ্ছৃঙ্খল জনতা বদ
চেয়েছিল লুটতে সম্পদ
চালালো গুলি, পুলিশ
আর বলি আমি চুটিয়ে
অপরাধের ফল, হাড্ডি দেয় ছুটিয়ে
একটি প্রাচ্য প্রেমগাথা
প্রেমিক আমি, হৃদয় উৎসারিত প্রেমগাথা বলি
যদিও অন্ধ, চাঁদটি বিশ্বাসপ্রবণ, সুন্দরের ফলি
ভাবনায় ডুবে থাকে, বলে না কথা মুঠো
যত্ন নেয় ঠিকঠাক, বুজে তার চোখ দুটো
ভাবিনি স্বপ্নে কখনো অমন গভীর সাগর
আঁধার দুনিয়াটা, তাই বনেছি ঘুমের নাগর
নতুন প্রাণে জেগে উঠে এই আমি ছোট্ট বালক
দেখি দুনিয়া বরবাদ, ছড়ানো ধ্বংসের পালক
প্যানেল