ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অ্যান সেক্সটনের কবিতা

ভূমিকা ও অনুবাদ : তূয়া নূর

প্রকাশিত: ০১:২৮, ৩ মার্চ ২০২৩

অ্যান সেক্সটনের কবিতা

অ্যান সেক্সটন (১৯২৮-১৯৭৪) ছিলেন সিলভিয়ার প্লাথের চেয়ে চার বছরের বড়

অ্যান সেক্সটন (১৯২৮-১৯৭৪) ছিলেন সিলভিয়ার প্লাথের চেয়ে চার বছরের বড়। তারা ছিলেন সমসাময়িক কবি। দুজনে বেড়ে ওঠেন বোস্টন শহরের ওয়েলেসলিতে। তবে তারা কেউ কাউকে চিনতেন না। এই দুজন কবির ভেতর আছে কিছু অসাধারণ মিল। ১৯৫৭ সালে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা কবিতার ওয়ার্কশপে তার সঙ্গে দেখা হয় সিলভিয়া প্লাথের। এখানে তিনি সঙ্গ পান ম্যাক্সিন কুমিন, রবার্ট লাওয়েল ও জর্জ স্টারবার্কের। তার সখ্য গড়ে ওঠে ম্যাক্সিন কুমিন ও সিলভিয়া প্লাথের সঙ্গে। সিলভিয়া মারা গেলে তিনি ব্যথিত হয়ে কবিতা লিখেছিলেন। আর ম্যাক্সিন কুমিনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত। 
জীবদ্দশায় কবি অ্যান লেখার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। অনেক নামি-দামি পুরস্কার পান তিনি কবিতার জন্য। পুলিৎজার পুরস্কার পান তিনি ১৯৬৭ সালে। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো To bedlam and part way back, All the pretty ones, Live or die, Love poems, Transformations, The death notebook উল্লেখযোগ্য। ম্যাক্সিন কুমিনের সঙ্গে তিনি লিখেছেন শিশু-কিশোর উপযোগী গ্রন্থ। 
দুটো সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অ্যান সেক্সটন মানসিক সংকটে ভেঙে পড়েন এখন এই অবস্থাতে বাইপোলার সিন্ড্রোম বলে। স্বামীর অতিরিক্ত মদ্যপান, সেখান থেকে শুরু পারিবারিক ভায়োলেন্স। কয়েকবার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সন্তান কিংবা নিজের যত্ন কোনোটাই তিনি ঠিকমতো করতে পারছিলেন না। এ রকম মানসিক অবস্থায় কবিতা ছিলও তার বেঁচে থাকার অবলম্বন। চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলেন হাসপাতালে। তার ডাক্তার ছিলেন মার্টিন ওরনে। অ্যান তাকে তার জীবন সংগ্রামের কবিতা দেখালেন। ডাক্তার বললেন, কবিতার ভেতর থাকতে। কবিতা তাকে মানসিক শান্তি দিতে পারে। 
তাদের বিবাহিত জীবন ছিলও ২৫ বছরে। ছাড়াছাড়ি হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুই সন্তান নিয়ে আরও বেশি ভেঙে পড়েন মানসিকভাবে। বিচ্ছেদের দেড় বছরের মাথায় তিনি আত্মহত্যা করেন ১৯৭৪ সালে। দীর্ঘদিনের বন্ধু ম্যাক্সিন কুমিনের সঙ্গে একসঙ্গে বসে একটা বইয়ের জন্য কাজ করলেন, যে বইটা মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছিল। দুপুরে একসঙ্গে খেলেন। এরপর তিনি বাসায় ফিরলেন। মায়ের দেওয়া পশমের কোট পড়লেন। বসলেন তার লাল রঙের মারকারি কুগার গাড়িতে। গাড়ি চালিয়ে দিলেন গ্যারেজের ভেতর সজোরে। 
তিনি ছিলেন নারীবাদী কবি। তার কবিতাগুলো স্বীকারোক্তিমূলক। সতেরো শতাব্দীতে ডাইনী বলে দোষী সাব্যস্ত করে নারীদের হত্যা করা হতো পাথর ছুড়ে, ফাঁস দিয়ে ও পানিতে ডুবিয়ে। তিনি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন নিজেকে তাদের একজন হিসাবে দাঁড় করায়ে এই কবিতায়।

×