ছবিঃ সংগৃহীত
গর্ভধারণের আগে কীভাবে প্রস্তুত করবেন আপনার শরীর
গর্ভাবস্থার নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কি আপনার শরীর শারীরিকভাবে প্রস্তুত? পরিবার শুরু করার কথা ভাবছেন? অভিনন্দন! সন্তানের পরিকল্পনা করার সময় শুধু আর্থিক স্থিতিশীলতা বা মানসিক প্রস্তুতি নয়, শরীরকেও গর্ভধারণের জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন। শরীর যদি পর্যাপ্ত ফিট ও শক্তিশালী না থাকে, তাহলে গর্ভাবস্থায় পিঠ ব্যথা, পায়ের ব্যথাসহ নানা অস্বস্তিতে ভোগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। চলুন জানি, কীভাবে গর্ভাবস্থার জন্য শরীর প্রস্তুত করবেন।
১. পুরোনো আঘাত এবং সমস্যা সমাধান করুন
গর্ভধারণের আগে যেকোনো পুরোনো মাংসপেশি বা হাড় সংক্রান্ত সমস্যা যেমন সায়াটিকা, প্ল্যান্টার ফ্যাসিয়াইটিস, কুলহাড়ের সমস্যা বা পিঠের ব্যথা ঠিক করা জরুরি। কারণ গর্ভাবস্থায় স্পাইনাল চাপ বেড়ে যাওয়া ও হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এসব সমস্যা তীব্রতর হতে পারে। গর্ভধারণের কয়েক মাস আগে একজন ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে এসব সমস্যা মোকাবিলা করুন।
২. কার্ডিও ব্যায়াম করুন
নিয়মিত কার্ডিও করা শরীরকে ফিট রাখতে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গর্ভাবস্থায় রক্তের পরিমাণ প্রায় ৪৫ শতাংশ বাড়ে, হার্ট রেট বৃদ্ধি পায় এবং গর্ভকালীন উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকিও থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যায়াম এসব চাপ কমাতে সহায়ক। হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং ও নাচের মতো যে কোনো অ্যারোবিক ব্যায়াম করুন যা আপনি নিয়মিত করতে পারবেন। গর্ভাবস্থায়ও কার্ডিও করা যায়, তবে এর জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩. পেলভিক ফ্লোর মজবুত করুন
গর্ভাবস্থা পেলভিক ফ্লোরের ওপর চাপ ফেলে, যা পায়ুর নিচের মাসলগুলোর একটি জাল। এই অংশ দুর্বল হলে প্রস্রাব বা অন্য কোনো অসুবিধা হতে পারে। পেলভিক ফ্লোর শক্তিশালী করতে কীগেল ব্যায়াম, হিল স্লাইড, হ্যাপি বেবি পোজ, লঞ্জ ও স্কোয়াট করুন।
৪. মজবুত ও নমনীয় কোর তৈরি করুন
গর্ভাবস্থায় ইউটেরাস এবং পেট দ্রুত বড় হওয়ায় কোর মাসলকে এটি সমর্থন করতে হয়। দুর্বল কোর পেশি পিঠে ব্যথা ও অস্বস্তি বাড়ায়। প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম এবং যোগ ও পিলাটিসের মাধ্যমে কোর শক্তি ও নমনীয়তা বাড়ান।
৫. পা মজবুত করুন
গর্ভাবস্থায় ও পরে পায়ের পেশি অতিরিক্ত কাজ করবে। গর্ভাবস্থার অতিরিক্ত ওজন বহন ও শিশুকে নিরাপদে তুলতে ও নামাতে পায়ের শক্তি দরকার। স্কোয়াট, ব্রিজ, ডেডলিফটের মতো ব্যায়াম করে পা ও গ্লুটস শক্তিশালী করুন।
গর্ভধারণের আগে শরীর ভালোভাবে প্রস্তুত থাকলে গর্ভকালীন অস্বস্তি অনেকটাই কমে আসবে এবং সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। তাই আপনার শরীরের যত্ন নিয়ে গর্ভাবস্থার জন্য তৈরি হোন।
ইমরান
