
সংগৃহীত প্রতীকী ছবি
স্মার্টফোনের স্ক্রিনে আটকে থাকা সময় ফেরানোর উপায় নেই, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের নিষ্ক্রিয় স্ক্রলিংয়ের বদলে কিছু সৃজনশীল কাজে সময় দিলে জীবন বদলে যেতে পারে। মনোবিজ্ঞানী ও প্রোডাক্টিভিটি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে তৈরি হলো এমন ১০টি কার্যক্রমের তালিকা, যা আপনার অবসরকে করবে অর্থবহ:
১. মাইন্ডফুল ওয়াকিং: পার্কে বা বাড়ির ছাদে ১৫ মিনিট হাঁটুন ফোন ছাড়া। পায়ের নিচের ঘাস, গাছের পাতার শব্দ বা পাখির ডাকের দিকে মন দিন। গবেষণা বলে, প্রকৃতির সান্নিধ্য স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল ২০% পর্যন্ত কমায়।
২. হাতে লেখার অভ্যাস: পুরনো ডায়েরি বের করে আজকের জন্য তিনটি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন লিখুন। যেমন: "আজ সকালের চায়ের স্বাদ ভালো লেগেছে" বা "বাসের ড্রাইভারটি সৌজন্য দেখিয়েছে"। এই অভ্যাস ডিপ্রেশন রিস্ক ৩৫% কমায়।
৩. রান্নার নতুন রেসিপি: ইউটিউব দেখে না করে মা বা দাদির কাছ থেকে শিখে নিন কোনো ঐতিহ্যবাহী রেসিপি। মসুর ডালের ভর্তা বা ইমারতি তৈরি শেখার সময় পারিবারিক ইতিহাসও জানতে পারবেন।
৪. স্ট্যান্ড-আপ কমেডি দেখুন: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ৩০ মিনিটের স্ট্যান্ড-আপ শো দেখুন। হাসি সেরোটোনিন হরমোন বাড়ায়, যা অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্টের মতো কাজ করে।
৫. বিনা উদ্দেশ্যে ছবি তোলা: ফোন ক্যামেরা দিয়ে বাড়ির আশেপাশের সুন্দর মুহূর্ত ধারণ করুন - রোদ্দুরে খেলা বিড়ালছানা বা বিকেলের আকাশের রঙ। পরে গ্যালারিতে দেখলে মন ভালো হবে।
৬. পাজল সমাধান: সুডোকু বা ক্রসওয়ার্ডের বই কিনে রাখুন টেবিলে। দিনে ১০ মিনিট পাজল সলভিং ব্রেইনের নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ায়।
৭. অপ্রয়োজনীয় জিনিস দান: আলমারিতে থাকা সেই অতিরিক্ত টি-শার্ট বা পড়া বইগুলো আশ্রমে বা লাইব্রেরিতে দিয়ে আসুন। গবেষণায় দেখা গেছে, দানশীলতা ডোপামিন লেভেল বাড়ায়।
৮. গান শেখা: হারমোনিয়াম বা গিটার বাজানো শিখুন ইউটিউব টিউটোরিয়াল দেখে। নতুন কিছু শেখার চেষ্টা আলঝাইমার্সের ঝুঁকি কমায়।
৯. স্টোরি টেলিং: ছোট ভাইবোন বা সন্তানদের জন্য নতুন গল্প তৈরি করুন। চাঁদপুরের রাক্ষস বা নীলপরীর অ্যাডভেঞ্চার - কল্পনাশক্তি বাড়াবে।
১০. নাইট স্কাই অবজারভেশন: রাতে ছাদে বা বারান্দায় চা নিয়ে বসুন, চাঁদ-তারা দেখুন। মহাজাগতিক এই দৃশ্য জীবনের বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিত বোঝায় সাহায্য করে।
মনোবিদ ড. অর্পিতা ঘোষের মতে, "সোশ্যাল মিডিয়ার প্যাসিভ কনজাম্পশন আমাদের ব্রেইনকে নেশাগ্রস্ত করে তোলে। এই সহজ বিকল্পগুলো মনকে সতেজ রাখে।" পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে একজন ব্যবহারকারী দিনে ২.৫ ঘণ্টা শুধু স্ক্রলিংয়ে ব্যয় করেন, যা বছরে প্রায় ৩৮ দিনের সমান! আজই ফোনের স্ক্রিন টাইম লিমিট সেট করে শুরু করুন এই অভ্যাসগুলো। প্রথমে কঠিন লাগলেও ২১ দিনের মধ্যে এটি রুটিনে পরিণত হবে। মনে রাখবেন, প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান - তা কাটাতে হবে সচেতনভাবে।
সাব্বির