ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কোন ৮টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছেন? 

প্রকাশিত: ১০:০১, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৪, ২ জুন ২০২৫

কোন ৮টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছেন? 

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে হার্ট ডিজিজ বা হৃদরোগ এখনো মৃত্যুর প্রধান কারণ। প্রায় ১২৭.৯ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক হার্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তবে সময়মতো সতর্কতা ও চিকিৎসা গ্রহণ করলে এই রোগ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অনেক সময় হার্টের সমস্যার উপসর্গ গুলি খুব স্পষ্ট হয় না। তাই ছয়জন কার্ডিওলজিস্টের কাছ থেকে জানা গেছে এমন ৮টি লক্ষণ সম্পর্কে যেগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

১. বুকের ব্যথা বা অস্বস্তি

বুকের চাপ, টান, ভারী লাগা বা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হার্ট সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এই ব্যথা বাহু, ঘাড়, চোয়াল বা পিঠেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্লেন তেসফু, এমডি জানান, বুকের ব্যথা সবসময় হার্টজনিত না হলেও তা উপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ।

২. শ্বাসকষ্ট

হঠাৎ স্বাভাবিক কাজকর্মে যেমন সিঁড়ি বাওয়া, বাজারের ব্যাগ বহন বা শুয়ে থাকার সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হলে তা হালকাভাবে নিলে চলবে না। এটি হার্ট ঠিকমতো রক্ত পাম্প না করতে পারার কারণে হতে পারে, যা হার্ট ফেলিওর বা ভাল্বের সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

৩. অনিয়মিত হার্টবিট বা পালপিটেশন

দ্রুত হার্টবিট বা বুক ধড়ফড় করা যদি নিয়মিত হয় বা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে তা অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হার্ট রিদমের লক্ষণ হতে পারে, যা স্ট্রোক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বাড়ায়।

৪. পা বা গোড়ালিতে ফোলা

হার্ট ঠিকমতো কাজ না করলে পা ও গোড়ালিতে রক্ত জমে যেতে পারে, ফলে সেখানে ফোলা বা ইডিমা হতে পারে। যদি এই ফোলাভাব কয়েক দিনের মধ্যে না কমে এবং অন্য উপসর্গ যেমন ক্লান্তি বা দ্রুত হার্টবিট থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি।

৫. উচ্চ রক্তচাপ

উচ্চ রক্তচাপ হলে হার্টকে বেশি কাজ করতে হয়, ফলে হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি সাধারণত কোনো উপসর্গ ছাড়াই ধীরে ধীরে ক্ষতি করে। তাই প্রতি বছর অন্তত একবার ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করা দরকার।

৬. অজানা কারণে মাথা ঘোরা বা ক্লান্তি

হঠাৎ মাথা ঘোরা, অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা ব্রেইন ফগ হলে হার্টের রক্ত সরবরাহে সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে শারীরিক পরিশ্রমে এমন অনুভূতি হলে এটি হার্টের ধমনীতে ব্লকেজের ইঙ্গিত।

৭. অন্যান্য শারীরিক সমস্যা

ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, কিডনির রোগ, ঘুমের সমস্যা (স্লিপ অ্যাপনিয়া), COPD ইত্যাদি রোগ থাকলে হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এসব ক্ষেত্রে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

৮. পারিবারিক ইতিহাস

পরিবারে যদি হার্ট ডিজিজের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিজের শরীর ভালো থাকলেও সতর্ক থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা জানান, পারিবারিক জেনেটিক প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ এবং আগেভাগে সতর্কতা গ্রহণ করলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।

উপরোক্ত যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন কার্ডিওলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। অনেক সময় লক্ষণগুলো খুব স্পষ্ট না হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে ধরতে পারলে চিকিৎসা কার্যকর হয়।

হার্টের সমস্যা গোপনে শরীরে ক্ষতি করে। তাই যে কোনো উপসর্গ অবহেলা না করে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বয়স, পারিবারিক ইতিহাস ও জীবনযাপন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তাহলে নিয়মিত চেকআপ করাই শ্রেয়।

সূত্রঃ www.eatingwell.com

নোভা

×