ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

সৌন্দর্য বাড়াতে আংটি

কারিমুন্নেছা হক

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২০ আগস্ট ২০২৩

সৌন্দর্য বাড়াতে আংটি

.

ছোট্ট একটি গহনা আংটি। অথচ এটি হাতের আঙুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। তেরো বছরের কিশোরী রিজুনের স্কুলের সামনেই নানা ধরনের গহনা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন একজন দোকানদার। প্রায়ই স্কুল থেকে আসার সময় কিশোরী ওই চলন্ত দোকানে যান আংটি কিনতে। মা দিবস এলেই মাকে সেগুলো উপহার দেন। রিজুন জানে তার মা আংটি পরতে পছন্দ করেন। নিজেরও রয়েছে এই ছোট্ট গহনাটির উপর দুর্বলতা। জন্মানোর পরই কাছের মানুষগুলো তাকে নানা উপহার দিয়েছে। সেখানে ছিল কিছু আংটি যা রিজুন এখনো পরে ভালোলাগা নিয়ে। তাই মাকেও বিভিন্ন উপাদানে তৈরি আংটি উপহার দেন বিশেষ কোনো দিবস এলেই। হাল ফ্যাশনে সৌন্দর্য্যে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে এই আংটি। তরুণ-তরুণীদের কাছে আংটি কেবল সাজগোজের একটি অংশ নয়। বরং ফ্যাশন ব্যক্তিত্ব প্রকাশেরও একটি মাধ্যম। বর্তমানে আংটি শুধু একটি আঙুলেই নয় বরং একাধিক আঙুলেও ব্যবহার করা হয়। পাথর বা মুক্তা বসানো সোনার আংটির চল কমে গেছে ক্রমেই। এর জায়গা দখল করে নিয়েছে কাঠ, পিতল, পুঁতি, মিনা করা পাথরে নজরকাড়া নকশার বড় আংটি। আধুনিক ফ্যাশনে একটু বড় আঁকাবাঁকা আকৃতির আংটি যুক্ত হয়েছে। শাড়ির সঙ্গে ধরনের আংটি বেশি মানায়। তবে কুর্তা, ফতুয়া বা কামিজের সঙ্গেও পরা যেতে পারে। দেশী পোশাকের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নকশার বড় আংটিই বেশি মানানসই।

পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে আবার বিপরীত রঙের পাথর নকশার আংটিও পরা যায়। যারা আংটিটাই বেশি দৃষ্টিগোচর করতে চান তাদের হাতে মোটা বালা, চুড়ি বা ব্রেসলেট না পরাই ভালো। আর পরলেও তা হতে হবে খুব সাধারণ ছিমছাম। এছাড়া চাইলে এক হাতের আঙুলে বৈচিত্র্যময় আংটি অন্য হাতে বালা অথবা ঘড়ি পরা যেতে পারে। সাধারণত অনামিকাতে নারীরা আংটি পরতে বেশি পছন্দ করেন। তবে আকারে বড় হলে আংটি মধ্যমা আঙুলে পরা উচিত। কারণ, এটি দুই পাশের দুই আঙুলেরও কিছু অংশ ঢেকে রাখে।

গহনার অন্যতম অনুষঙ্গ আংটি। এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা প্রয়োজন। একটি জমকালো হলে আরেকটি হওয়া উচিত ছিমছাম। লম্বা বা মাঝারি যেকোনো আঙুলেই আংটি দেখতে খুব সুন্দর লাগে। যাদের হাত বেশি রোগা এবং আঙুলগুলো ছোট, তাদের বড় আংটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। তারা উঁচু আংটি না পরে, সমতল নকশার আংটি বেছে নিতে পারেন।

দেশীয় ঐতিহ্যময় কাঠের বড় আংটিগুলো দেখতে ভারি মনে হলেও তা আসলে অনেক হালকা। আকারে বড় হলেও সুনিপুণভাবে এগুলোর নকশা করা হয়। পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে নতুনত্ব আনতে রকম বড় ভিন্নধর্মী নকশার আংটি পরা যেতে পারে। চুড়ি বা ব্রেসলেট না পরলেও আংটিও আপনাকে ফ্যাশনাবল লুক এনে দিতে পারে। তবে কোন পোশাকের সঙ্গে কি ধরনের আংটি ভালো দেখাবে, তা নির্ভর করে পোশাক আংটির নকশার ওপর। আজকাল অনেককে ফাংকি টাইপের কিছু আংটিও পরতে দেখা যাচ্ছে। ধরনের আংটিগুলো বেশির ভাগই গোল, বরফি, তিন কোনা ডিম আকৃতির। এতে ধাতু বিভিন্ন রং-এর পাথরই বেশি ব্যবহৃত হয়। এগুলো পাওয়া যাচ্ছে দেশের ফ্যাশন হাউস ছাড়াও মার্কেটের কসমেটিকসের দোকানগুলোতে। স্বর্ণের যেকোনো গহনা এখন খুবই ব্যয়বহুল। তাই হাতের আঙুল সাজাতে কিনতে পারেন কাঠ, রুপা ছাড়াও বিভিন্ন মেটারিয়াল দিয়ে তৈরি আংটি। থেকে এর মধ্যেই ক্রয় করা সম্ভব।

আংটি পরার প্রতি নারী-পুরুষ সকলেরই আগ্রহের সীমা নেই। নারীরা সাধারণত হাতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অনেক ডিজাইনের আংটি পরেন। আর বহু পুরুষ সম্পত্তির আড়ম্বর বোঝাতে আংটি পরে থাকেন। আঙুল ভেদে আংটি পরিধান বিভিন্ন বার্তাও বহন করে। অধিকাংশ পুরুষেরা আংটি পরেন জোত্যিষিদের নির্ধারিত পাথরের। এর মাধ্যমে আভিজাত্যও প্রকাশ পায়। আংটি শুধু হাতেই নয় নারীর পায়েও শোভা পাচ্ছে কয়েকযুগ আগে থেকেই। নুপূরের পাশাপাশি পায়ে আংটি নারীর সৌন্দর্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। সাধারণত পায়ে পরা হয় রুপার তৈরি আংটি। এটি এমন একটি গহনা যা নারী-পুরুষ সবারই হাতের আঙুলের সৌন্দর্য বর্ধন করে।

মডেল : মেহেরুন্নেসা মিনি

স্টাইল: বিডি মিজু

মেকাপ: শোভন মেকওভার

পোশাক : ডোরস

ছবি : মঞ্জুরুল আলম

×