ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

যুদ্ধবিরতির পরও দেখা মেলেনি, কোথায় গেলেন খামেনি?

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ২৬ জুন ২০২৫

যুদ্ধবিরতির পরও দেখা মেলেনি, কোথায় গেলেন খামেনি?

ছবি: সংগৃহীত।

তাকে বলা হয় মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও দৃঢ়চেতা নেতা। যার এক আহ্বানে ইরান জেগে ওঠে, আর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু পিছু হটতে বাধ্য হন। তিনি আর কেউ নন—ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। কিন্তু ইরান-ইসরায়েল টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি ও কার্যত ইরানের বিজয়ের মধ্যেও, এই কৌশলী নেতাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

এই অনুপস্থিতি ঘিরে ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে ব্যাপক জল্পনা। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে খামেনিকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি, এমনকি কোনো ভাষণ বা বিবৃতিও শোনা যায়নি।

মঙ্গলবার ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক উপস্থাপক সরাসরি খামেনির কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা মেহেদী ফাজায়েলীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, “মানুষ উদ্বিগ্ন—আমাদের সর্বোচ্চ নেতা কেমন আছেন?” উপস্থাপক জানান, একই প্রশ্নে দর্শকদের কাছ থেকেও অসংখ্য বার্তা এসেছে।

কিন্তু উত্তরে ফাজায়েলী স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না দিয়ে বলেন, “সবার উচিত প্রার্থনা করা। যাঁরা নেতাকে রক্ষার দায়িত্বে আছেন, তাঁরা তাঁদের কাজ সঠিকভাবেই করছেন। ইনশাআল্লাহ, খুব শিগগিরই জনগণ তাঁর পাশে থেকে বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করতে পারবে।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে আয়াতুল্লাহ খামেনি বর্তমানে একটি সুরক্ষিত বাংকারে অবস্থান করছেন এবং সম্ভাব্য গুপ্তহত্যা এড়াতে তিনি সকল প্রকার ইলেকট্রনিক যোগাযোগ থেকে বিরত রয়েছেন।

তবে খামেনির এই হঠাৎ নিখোঁজ এবং নীরবতা শুধু সাধারণ মানুষের মধ্যেই নয়, রাজনৈতিক মহলেও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেউ জানতে চাইছে, তিনি কি আদৌ যুদ্ধবিরতি বা সাম্প্রতিক কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? তিনি কি সুস্থ আছেন, আহত, নাকি এর চেয়েও কিছু বেশি?

এদিকে ইসলামি রেভলিউশনারি গার্ড কোরের কমান্ডার ইয়াহিয়া সাফাভীর ছেলে হামজা সাফাভি জানান, “ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা—ইসরায়েল এখনো খামেনিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে। তাই তাঁকে বিশ্বের সব যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে।”

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শেষে যখন ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে কার্যত ইসরায়েলের পিছু হটাকে স্বীকৃতি দিলেন, তখন খামেনির অনুপস্থিতি আরও বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে—এই বিজয়, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেও যদি তিনি নীরব থাকেন, তবে তার পেছনের কারণ কী?

নুসরাত

×