
ছবি: সংগৃহীত
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইরানের দূরপাল্লার এবং অত্যন্ত শক্তিশালী সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড (আইআরজিসি) জানিয়েছে, তারা এই সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের দখলকৃত গোলান মালভূমি ও দক্ষিণ ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলজুড়ে সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের তাণ্ডবের খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, যেখানে ৩০ জনের বেশি নিহত ও ২০০ জনের বেশি আহতের দাবি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত বুধবার (১৮ জুন, ২০২৫) ইরান ইসরায়েলে তাদের ১২তম বারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার মধ্যে সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল। তেল আবিব ও এর পূর্বাংশে শক্তিশালী বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। এই হামলায় ইসরায়েলে ৩০ জনের বেশি নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে দাবি ইরানের। এছাড়া, দশটিরও বেশি ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে এবং ৫০টির বেশি ভবন আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হার্জেলিয়া, বাত ইয়ামসহ হাইফাতে কয়েকটি সামরিক রাডার সিস্টেমও সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে বলে খবর।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে সফলভাবে প্রবেশ করেছে। সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের পর দুটি ধাপে গতি নেয় এবং ৭০০ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে দ্রুত শত্রুর অবস্থানে আঘাত হানতে সক্ষম। এর পাল্লা প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার, যা ইসরায়েলসহ দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের কিছু অংশকেও আঘাত হানতে পারে।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই ধরনের হামলার বিস্তারিত তথ্য স্বীকার করেনি, যদিও তারা জানিয়েছে যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলের সম্পত্তি কর ক্ষতিপূরণ তহবিলের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভয়ে ৮ হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি বাসিন্দা ঘর ছেড়েছেন।
এই হামলাকে ইরানের সমর কৌশলের একটি বড় প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র এখন প্রতিরোধ নয়, আক্রমণের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ব্যালিস্টিক মিসাইল ও শাহেদ-১০৭ এর পর সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার ইরানকে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।
সাব্বির