
বৈশ্বিক উষ্ণতার স্থায়ী ক্ষতি
বৈশ্বিক উষ্ণতার স্থায়ী ক্ষতি এড়ানোর জন্য মানবজাতির হাতে বেশি সময় নেই বলে সতর্ক করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার জন্য আর তিন বছর মতো সময় রয়েছে আমাদের। বিশ্বের শীর্ষ ৬০ জন জলবায়ু বিজ্ঞানী তাদের সর্বশেষ পর্যালোচনার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। খবর বিবিসির।
জলবায়ু পরিবর্তনের গ্রাস থেকে বাঁচতে ২০১৫ সালে প্যারিস সম্মেলনে প্রায় দুইশ দেশ জানিয়েছিল, তারা গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। সে জন্য ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে অর্থাৎ প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আটকে রাখা হবে। তবে প্যারিস সম্মেলনের প্রায় দশ বছর হতে চললেও আশানুরূপ কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। চলতি দশকের শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি আকাক্সিক্ষত মাত্রায় আটকে রাখতে সর্বোচ্চ আর ৫০০ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণ সহ্য করবে পৃথিবী।
তবে মিথেনসহ অন্যান্য গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ বিবেচনায় এবং ক্রমবর্ধমান তাপ বৃদ্ধি যাচাই করে, চলতি বছর বিজ্ঞানীরা বলছেন, সর্বোচ্চ ১৩০ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণ মেনে নেবে প্রকৃতি। এর মধ্যে ঠিকঠাক পথে না চললে দীর্ঘস্থায়ী ভোগান্তিতে পড়বে মনুষ্যজাতি। উল্লেখ্য, এখন প্রতি বছর গড়ে ৪০ বিলিয়ন টন কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে পুরো বিশ্ব। সে হিসেবে ১৩০ বিলিয়নের কোটা পূরণ হতে মোটামুটি বছর তিনেক হাতে আছে। প্রতি বছর বৈশ্বিক জলবায়ু অস্বাভাবিক আচরণ করছে। যেমন ২০২৪ সাল ছিল মানবজাতির রেকর্ডকৃত সবচেয়ে উষ্ণতম বছর।
গবেষকরা দাবি করছেন, প্রাক শিল্প যুগের তুলনায় গত বছর তাপমাত্রা এক দশমিক ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছিল। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রাকৃতিকভাবে তাপ নিঃসরণ কমানো এবং গাছপালা বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দেওয়ার বদলে উচ্চাভিলাষী বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। তাদের দাবি হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ তারা এমন প্রযুক্তি আবিষ্কার করবে, যা বিশ্বের কার্বন-ডাই অক্সাইড শুষে নিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে।