ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পতনের মুখে নেতানিয়াহুর সরকার!

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫১, ১১ জুন ২০২৫

পতনের মুখে নেতানিয়াহুর সরকার!

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের উত্তাপের মধ্যেই বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে ইসরায়েল। গাজায় চলমান যুদ্ধ ও দেশজুড়ে বিক্ষোভের মাঝেই এবার নিজ দলের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী ইতামার বেনগভির ও বেজালেল স্মট্রিচের উপর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সহ পাঁচ পশ্চিমা দেশের নিষেধাজ্ঞা নেতানিয়াহুর সরকারকে একেবারে পতনের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।

দুই বছরের যুদ্ধে বিধ্বস্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিজের একক সিদ্ধান্ত, যুদ্ধকবলিত গাজায় হামলা এবং দেশে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগে আগেই সমালোচনার মুখে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এবার তার জোটের অন্যতম দুই শরিক দল 'শাস পার্টি' ও 'ইউনাইটেড তোরা জুডাইজম' নেতানিয়াহুবিরোধী অবস্থানে যাওয়ায় ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙ্গন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যেই নেতানিয়াহুকে সরিয়ে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলেছে। তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপে নেতানিয়াহুকে অপসারণ করা হবে। এমন অবস্থায় নেতানিয়াহু জোট রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

সূত্র মতে, বিলুপ্তি প্রস্তাব ঠেকাতে নেতানিয়াহু ভান করছেন অসুস্থতার। তাছাড়া বিভিন্ন অবান্তর ইস্যুকে এজেন্ডায় রেখে বিলম্বিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তার সরকারের বিরুদ্ধে।

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, গাজার যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষকে বলি দিয়ে নেতানিয়াহু আজীবন ক্ষমতায় থাকার অপচেষ্টা করছেন। প্রতিদিন ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে প্রতিরোধ যোদ্ধারা, যা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজা নিয়ে ইসরায়েলের কোনো কৌশল এখন আর কার্যকর হচ্ছে না। বরং প্রতিরোধ যোদ্ধারা অত্যাধুনিক অস্ত্র ও এলিট বাহিনীকে টেক্কা দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এতে বাড়ছে ইসরায়েলি সেনাদের মৃত্যু।

নিজ দলের ভিতরে ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বেনগভির ও স্মট্রিচের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং নেতানিয়াহুর একক সিদ্ধান্তে চলা আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নিজ দলের অনেক নেতাও।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (ICC) আগেই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর আবারও নিজের দুই প্রধান মন্ত্রীর উপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সরকারকে চরম সংকটের মুখে ফেলেছে।

প্রতিদিন ইসরায়েলের ভেতরেই চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সেনারাও যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে।

নিরাপত্তা নেই নিজ ভূখণ্ডেই, প্রতিদিনই পড়ছে রকেট, ড্রোনের হামলা। একদিকে যুদ্ধ, অন্যদিকে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবরোধে কার্যত ইসরায়েল অর্থনৈতিকভাবে অচল হয়ে পড়েছে।

নানা হামলা, রাজনৈতিক সংকট ও অর্থনৈতিক স্থবিরতায় ইসরায়েল এখন কার্যত গৃহযুদ্ধের মুখে। জনগণ বলছে, “যুদ্ধের নামে হাজার হাজার জীবন ঝরে যাচ্ছে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির জন্য গোটা জাতিকে ভুগতে হচ্ছে।”

মিমিয়া

×