ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইরানে প্রকাশ্যে কুকুর হাঁটানো নিষিদ্ধ! জানুন কেন এমন সিদ্ধান্ত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ৯ জুন ২০২৫

ইরানে প্রকাশ্যে কুকুর হাঁটানো নিষিদ্ধ! জানুন কেন এমন সিদ্ধান্ত

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে কুকুর হাঁটানোকে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলার জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে সম্প্রতি এই কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দেশের অন্তত ২০টিরও বেশি শহরে। ২০১৯ সালে রাজধানী তেহরানে প্রথম এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা চালু হয়। এবার সেই নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারিত হয়েছে কেরমানশাহ, ইলাম, হামেদান, কেরমান, বোরুজার্দ, রবাত কারিম, লাভাসানাত ও গোলেস্তানসহ একাধিক শহরে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সক্রিয় রয়েছে, এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা।

সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, কুকুর হাঁটানো জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে ব্যাঘাত ঘটায় এবং দেশের ইসলামি সংস্কৃতির পরিপন্থী। যদিও এসব দাবির পক্ষে কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কিংবা নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। হামেদান শহরের প্রসিকিউটর আব্বাস নাজাফি এক বিবৃতিতে বলেন, “কুকুর হাঁটানো জনস্বাস্থ্য, শান্তি এবং সামাজিক শৃঙ্খলার জন্য হুমকি।” তিনি আরও জানান, এই কার্যক্রমকে দমন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই নিষেধাজ্ঞার আইনি ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ইরানের দণ্ডবিধির ধারা ৬৩৮ (পাবলিক মরালিটি সংক্রান্ত), ধারা ৬৮৮ (জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি) এবং সংবিধানের ৪০ নম্বর অনুচ্ছেদ, যেখানে বলা আছে কেউ যেন অন্যের ক্ষতির কারণ না হন। ইলামের এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, পার্ক বা রাস্তা কিংবা গাড়িতে কুকুর বহন করলেও সেই ব্যক্তি শাস্তির মুখোমুখি হবেন। ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আদারবিল প্রদেশের খালখালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোজাফফর রেজায়ি নিশ্চিত করেছেন, ২০২৫ সালের ৬ জুন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

এদিকে সমাজের একটি অংশ মনে করছে, এটি মূলত পশ্চিমা সাংস্কৃতিক প্রভাব প্রতিরোধ এবং ইসলামি মূল্যবোধ টিকিয়ে রাখার একটি প্রচেষ্টা। অনেকে মনে করছেন, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু পোষা প্রাণীপ্রেমীদের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করছে না, বরং ধর্মীয় ব্যাখ্যার নামে নাগরিক অধিকার হরণ করছে। ফলে ইরানের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশ-বিদেশে বিতর্ক ও সমালোচনা জোরালো হচ্ছে।

মুমু ২

×