
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন। শনিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি এটাই ধরে নিচ্ছি, হ্যাঁ,”—জবাবটি আসে যখন তার ও মাস্কের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়।
পরবর্তীতে যখন জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি চান এই সম্পর্ক আবার জোড়া লাগুক, তখন ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, “না।”
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মধ্যে তীব্র বিরোধ প্রকাশ পায়। মূলত প্রেসিডেন্টের কর ও ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিল নিয়ে ইলন মাস্কের প্রকাশ্য সমালোচনার পর থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে বিলটি পাস হয়, যা ট্রাম্পের জন্য বড় একটি রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিলটি বর্তমানে সেনেটে অপেক্ষমাণ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্ক ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারে বিপুল অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন এবং ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করারও সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে বিলটির ব্যাপারে ট্রাম্পের অবস্থানের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিতর্কের সূচনা করেন মাস্ক। তিনি এটিকে ‘বড় সুন্দর বিল’ বলে কটাক্ষ করেন এবং দাবি করেন, এটি জাতীয় বাজেটে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি তৈরি করবে।
টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও মাস্ক ১২৯ দিন ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করার পর পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিতভাবে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যয়নীতি ও দক্ষতা বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন। যদিও তিনি সরাসরি ট্রাম্পের নাম করে কিছু বলেননি, তবে সম্প্রতি তার ভাষ্য অনেক বেশি ব্যক্তিগত হয়ে উঠেছে।
ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, মাস্কের আচরণ তাকে হতাশ করেছে। এর জবাবে মাস্ক এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ পোস্ট করে বলেন, “আমি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে জিততেই পারতেন না।” একই সঙ্গে তিনি প্রয়াত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের ইঙ্গিতও দেন, যদিও পরে পোস্টগুলো মুছে দেন।
ট্রাম্প তার নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যালে' মাস্ককে ‘পাগল’ আখ্যা দেন এবং ফেডারেল সরকারের সঙ্গে মাস্কের চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন।
এনবিসি নিউজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, তিনি (মাস্ক) প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।”
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি মাস্ক এর আগে ট্রাম্পকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিলেন নির্বাচনি প্রচারে। তবে এখন তিনি ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, আগামী নির্বাচনগুলোতে তিনি ট্রাম্পবিরোধী প্রার্থীদের সমর্থন দিতে পারেন।
ডেমোক্র্যাটদের কোনো প্রার্থীকে মাস্ক সমর্থন দিলে তার পরিণতি কী হতে পারে—এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, “তাকে মারাত্মক পরিণতির মুখে পড়তে হবে।”
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তি ও রাজনীতির এই সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনি পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
আলীম