
ছবি :সংগৃহীত
ইসরায়েল গাজা ও দখলকৃত পশ্চিম তীরে প্রতিদিন যুদ্ধাপরাধ করছে—এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে—এটি নতুন কিছু নয়। কিন্তু পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন ইসরায়েলিরা এমন অপরাধ করছে, যেখানে পুলিশ বা সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে না, বরং অনেক সময় চোখ বুজে থাকে।”
সাক্ষাৎকারে বর্তমান সরকারের নেতাদের তীব্র সমালোচনা করে ওলমার্ট বলেন, “যখন কেউ কোনো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার ডাক দেয়, সে মূলত গণহত্যারই আহ্বান জানায়।” তিনি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচের সেই বক্তব্যকে ‘গণহত্যার ডাক’ বলে আখ্যা দেন, যেখানে তিনি উত্তর পশ্চিম তীরের হুওয়ারা গ্রামটি পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ওলমার্ট বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ একটি “সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যহীন রাজনৈতিক যুদ্ধ।” তার মতে, এই যুদ্ধ গাজায় আটক থাকা বন্দিদের মুক্ত করবে না, বরং আরও বেশি ইসরায়েলি সেনার প্রাণহানি ঘটাবে।
ইসরায়েলের হিসেবে, বর্তমানে গাজায় ৫৮ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অভিযানে প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে গাজায় নেওয়া হয়েছিল, যাদের অনেককে পরে মুক্তি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, এখনও ইসরায়েলি কারাগারে অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এসব বন্দিরা চরম নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হচ্ছেন।
ওলমার্ট বলেন, “পশ্চিম তীরের সামারিয়া কাউন্সিলের প্রধান যখন গণহত্যার ডাক দেয় কিংবা কোনো মন্ত্রী যখন বলেন, ‘গাজায় একটি শিশুকেও বাঁচিয়ে রাখা যাবে না’—তখন আর কেউ বিস্মিত হয় না। এটা কতটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে, তা সরকার অনুধাবন করতে পারছে না।”
তিনি সরকারের সামরিক নীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “এই নীতির কারণেই বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার হিসেবে, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সা/ই