ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত: ২২:২৬, ১৭ মে ২০২৫; আপডেট: ২২:২৮, ১৭ মে ২০২৫

ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, "আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে ঢাকার রাজপথে, আর তাদের দাফন হয়েছে দিল্লিতে।"

তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘মহারাষ্ট্র মডেল’ অনুসরণ করে বাংলাদেশে প্রায় ১,৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। শতকরা ৬৬ ভাগ ক্ষেত্রে মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, এমনকি সামরিক অস্ত্র এবং হেলিকপ্টার গানশিপ থেকেও গুলি ছোড়া হয়েছে সাধারণ মানুষের উপর। এই গণহত্যার পরেও সরকার কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেনি, দুঃখপ্রকাশ বা ক্ষমা তো দূরের কথা, বরং দিল্লিতে বসে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে একটি ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচার করার দাবি জানিয়েছি। গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে শুধু ব্যক্তিকে নয়, রাজনৈতিক দলকেও বিচারের আওতায় আনতে হয়। আওয়ামী লীগ সেই বিচারেরই যোগ্য।”

তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস একদলীয় শাসন, দমন-পীড়ন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ভরা। তিনি বলেন, “শুধু জুলাই মাসের গণহত্যাই নয়, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৭,০০০ বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, অপহরণ করেছে, নির্যাতন চালিয়েছে। এসবই বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।”

আওয়ামী লীগের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, দলটি জন্মলগ্ন থেকেই একদলীয় শাসন কায়েমের চেষ্টায় লিপ্ত। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারিতে মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে সংবিধান পরিবর্তন করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা ছিল গণতন্ত্র হত্যার স্পষ্ট নজির। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে তারা আবার গণহত্যা চালিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটিয়েছে।

অর্থনৈতিক দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে সালাহউদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি ‘সাদা কাগজ কমিটি’ গঠন করা হয়েছিল, যার রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে ব্যাংক খাতে লক্ষ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই অর্থনৈতিক দুর্নীতির পরিমাণ এতটাই বেশি যে, সেই অর্থ দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু তৈরি করা যেত।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে এবং গত ১৫ বছরে মোট ২৯ লক্ষ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে, যা দেশের সম্পদের অপচয় এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি প্রতারণা।

সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে দাবি করেন, এইসব অনাচার, নিপীড়ন, দুর্নীতি এবং গণতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক পরিণতি ডেকে এনেছে। “বাংলাদেশের মানুষ আজ আওয়ামী লীগের নিপীড়ন থেকে মুক্ত,”—উল্লেখ করেন তিনি।

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=fSg5Q-5gn2M

আরো পড়ুন  

×