
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছেন। কারণ, ভারত সরকার অবৈধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে বহু বাংলাদেশিকে আটক করে পুশব্যাক করা হয়েছে। যদিও সরাসরি আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়নি, তবে আগামী আগস্ট থেকে কঠোর অভিযান শুরু হবে বলে জানা গেছে।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আশ্রয় নেওয়া নেতাদের অন্য কোনো দেশে চলে যেতে বলেছে। এ অবস্থায় প্রায় দেড় লাখ আওয়ামী লীগ নেতা, কর্মী ও তাদের পরিবার ভারতে চরম দুর্দশার মুখোমুখি হতে চলেছে বলে জানা গেছে। নেতারা বলছেন, দেশে ফিরে যাওয়ার মতো নিরাপদ পরিবেশ নেই, ফলে তারা চরম দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন।
আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দেশে ফেরার বিষয়টি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ভারতের অনুপ্রবেশবিরোধী নতুন আইনে কোনো বিদেশি নাগরিককে দীর্ঘমেয়াদে ভারতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হবে না। এই আইন এবং অবস্থান এখন ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য বড় সংকট তৈরি করেছে।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা আগস্ট মাস থেকে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করবে। এর আগেই আওয়ামী লীগ নেতাদের ভারত ছাড়ার জন্য সময় দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতা ভারত থেকে আমেরিকা ও ইউরোপে চলে গেছেন। বাকিরাও পশ্চিমা দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে দেশে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না কেউই।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে, এমপি, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সহযোগী সংগঠনের নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার নেতা-কর্মী বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যেও রয়েছেন অনেক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। এই অবস্থায় ভারত ছাড়ার চাপ তাদের মাঝে আরও অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনাকে কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা ভারতে নিরাপদে নেই এবং চরম চাপে রয়েছেন। শেখ হাসিনাও তাদের দেশ ছেড়ে ফিরে যেতে বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু দেশে ফিরে যাওয়ার মতো পরিবেশ না থাকায় নেতারা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, দেশে ফিরলে তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হওয়ায় দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আরও মামলা ও ধরপাকড় বাড়তে পারে। এতে দলটির নেতাকর্মীরা গোপনে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
তবে অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই নিষেধাজ্ঞাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে আওয়ামী লীগ। তারা নিজেদের ‘নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল’ হিসেবে তুলে ধরে দেশে ও বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা করতে পারে।
আসিফ