ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের পথে রাশিয়া–ইউক্রেন! আলোচনার প্রস্তাব পুতিনের

প্রকাশিত: ১২:২৬, ১২ মে ২০২৫

স্থায়ী যুদ্ধ বন্ধের পথে রাশিয়া–ইউক্রেন! আলোচনার প্রস্তাব পুতিনের

দীর্ঘ তিন বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন কিয়েভকে।

তাহলে কি স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের পথে রাশিয়া-ইউক্রেন? এই বিষয়ে ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া চাইছে ২০২২ সালের শান্তি চুক্তি নিয়ে আবারো আলোচনায় বসুক দুই দেশ। 

অপরদিকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চাইছে ইউক্রেনসহ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো।যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রবিবার ইউক্রেনের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আগামী বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠকটি আহ্বান করা হয়েছে। এ খবর শান্তির বার্তা ছড়িয়েছে দুদেশের নাগরিকদের মাঝে। পুতিনের এ আহ্বানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনিস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নিঃশর্ত নয় পুতিনের এ শান্তি প্রস্তাব। আলোচনায় বসার আগে কোন প্রকার পূর্বশর্ত রাখতে নারাজ রুশ প্রধান।

পাশাপাশি যুদ্ধের কারণকে সমূলে উৎখাত করে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রাখেন তিনি। চান ২০২২ সালের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে পুনরায় আলোচনার টেবিলে মুখোমুখি হোক কিয়েভ ও মস্কো।

পুতিন বলেন, “কোন প্রকার পূর্বশর্ত ছাড়াই কিয়েভকে ২০২২ সালে চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই দেরি না করে তারা আলোচনায় আসুক। যুদ্ধের কারণগুলোকে প্রতিহত করে আমরা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যার ইতিবাচক প্রতিফলন পড়বে উভয় দেশে।”

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার সূচনা হয়, যা পরিচিতি লাভ করে ইস্তাম্বুল ঘোষণা নামে। চুক্তিতে ইউক্রেনের পশ্চিমাঘেঁষা কৌশলগত অবস্থান, ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা ও পূর্ব ইউক্রেনের রুশবাসীদের নিরাপত্তার মতো বিষয় উত্থাপন করে রাশিয়া। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকেও সীমিত করার দাবি জানায় মস্কো। বিনিময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যসহ বেশ কিছু দেশের কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দাবি করে কিয়েভ। তবে ভবিষ্যতে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় চুক্তিটিকে সমর্থন দেয়নি পশ্চিমারা।

তবে কি থামতে যাচ্ছে রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধ? রয়েছে বেশ কিছু সংশয়। পুতিনের প্রস্তাবের একদিন আগেই জেলেনিস্কির সাথে দেখা করেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতারা। এ সময় ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান তারা। নতুবা রাশিয়াকে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এসব নেতারা। তবে এসব হুঁশিয়ারি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ক্রেমলিন।

ভলদিমির জেলেনিস্কি বলেন, “এই মুহূর্তে পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরোতি প্রয়োজন। মেনে নেওয়া না হলে জবাবদিহিতাও দরকার আছে। যুদ্ধবিরোতি কার্যকর হওয়ার পরেই শান্তির বিষয়ে আলাপ করতে পারি।”

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, “আমরা ২০টি দেশ একত্রে জোটবদ্ধ হয়েছি। আমরা আমেরিকার নজরদারিতে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরোতি চাই, যেখানে ইউক্রেন কিংবা রাশিয়া কোন পক্ষেরই কোন পূর্বশর্ত থাকবে না। রাশিয়া এটা না মানলে তাদের ইউরোপ ও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন করা হবে।”

তিন বছর ধরে চলমান এ যুদ্ধে ইউক্রেনের এক পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে রাশিয়া। হতাহত হয়েছে উভয় দেশের লক্ষাধিক সেনা। প্রাণ হারিয়েছেন কিংবা সব হারিয়ে নিঃস্ব অগণিত মানুষ।

 বিশ্ব তাকিয়ে আছে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের দিকে। 

 

 

 


সূত্র:https://tinyurl.com/ej3farty

আফরোজা

×