ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ এখন “লিটল বাংলাদেশ”

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১:১৫, ১৭ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ১৫:২৬, ১৭ অক্টোবর ২০২২

নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ এখন “লিটল বাংলাদেশ”

নিউইয়র্ক সিটির প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিম নারী কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফ

অবশেষে স্বপ্ন হলো সত্যি। নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউয়ে যুক্ত হলো বাংলাদেশের নাম। বাঙালি অধ্যুষিত এই এলাকার রাস্তাটির নতুন নামকরণ হয়েছে “লিটল বাংলাদেশ”। নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রোলার ব্রাড ল্যান্ডার, এ্যাসেম্বলি মেম্বর ববি ক্যারোল, নিউজার্সির ফ্রাঙ্কলিন টাউনশিপ এলাকার কাউন্সিল ওম্যান সেপা উদ্দীন আর কয়েকশ’ বাংলাদেশিকে সাথে নিয়ে রবিবার দুপুরে ঐতিহাসিক এই নামফলকটি উন্মাচন করেন নিউইর্কের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিম নারী কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফ।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফ বলেন, আমার বাবার লিটল বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট দেখে ছোট বেলা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম এবং ভেবেছিলাম যদি কখনো সুযোগ পাই এই চার্জ ম্যাগডোনাল্ড রোডের নাম লিটল বাংলাদেশ হিসেবে নামকরণ করব। কেংসিনটন এলাকার মানুষ আমাকে ভালবেসে ভোট দিয়ে কাউন্সিলার নির্বাচিত করেছেন বলেই আমি আমার এবং নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। 

তিনি বলেন, ভবিষ্যত  প্রজন্মের জন্য আমরা একটা ইতিহাস তৈরি করে রেখে যেতে পেরেছি তাই বাংলাদেশিদের জন্য আজকের দিনটি খুব আনন্দের এবং গর্বের।

কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, “লিটল বাংলাদেশ” নামফলক স্থাপনের মাধ্যমে নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি হলো নিউইয়র্কে। কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফকে এজন্য অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, তার নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তার বাবা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশকে প্রমোট করার যে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন আজ তার কন্যার মাধ্যমে সেই স্বপ্ন সত্যি হলো এজন্য তার বাবাকেউ ধন্যবাদ জানান। 

“লিটল বাংলাদেশ” এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিরা একটা সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করছে এবং বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে। সততা, পরিশ্রম এবং মেধার স্বাক্ষর রেখে বাংলদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান কনসাল জেনারেল। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া বলেন, ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউটি “লিটল বাংলাদেশ” নামকরণ হওয়াটা বাঙালি কমিউনিটির জন্য অনেক বড় বিজয়। আর বিজয়ের জন্য বাংলাদেশি কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফকে ধন্যবাদ জানান তিনি। 
 
বক্তব্য রাখেন এ্যানি ফেরদৌস, শিহাব চৌধুরী, খালেদা আক্তার রুবি, ফারুক ওয়াদুদ, ডা. লোটাস আহমেদ, মোহাম্মাদ হাসেম, সাবেরা চৌধুরী এবং জাহিদ মিন্টু। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী নওরিন সামাহা। 

নামফলক উন্মোচন শেষে মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন বাংলাদেশি ইনস্টিটিউট অফ পারফর্মিং আর্টস-বিপার শিল্পীরা। 

যার হাত ধরে “লিটল বাংলাদেশ” হলো

নিউইয়র্ক সিটির প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিম নারী কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফ। ব্রুকলিনের কেনসিংটনে জন্ম এই জনপ্রিয় রাজনীতিবীদের। সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিসট্রিক্ট-৩৯ থেকে ৮৯ শতাংশ ভোট পেয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। নির্বাচিত হবার পর থেকেই বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করে চলেছেন নিউইয়র্ক সিটির অভিবাসন বিষয়ক কমিটির সভাপতি শাহানা হানিফ। 

বাংলাদেশি অধ্যুষিত এই এলাকায় “বাংলাদেশ” নামটি যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় সেটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। কাউন্সিল ওম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাই জোর প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন তিনি। সিটি কাউন্সিলে রেজুলেশন উত্থাপনের পর সম্প্রতি সেটা পাশ হয়। রবিবার তার হাত ধরেই “লিটল বাংলাদেশ” নামফলকটি যুক্ত হলো নিউইয়র্কের রাস্তায়। রচিত হলো বাঙালির আরেকটি ঠিকানার ইতিহাস।

টিএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×