ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত অনেক দেশ: রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৩ জুন ২০২৫

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত অনেক দেশ: রাশিয়া

ছ‌বি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানোর পর ইরান এখন রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই হামলার জবাবে রাশিয়া ও ইরানের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে, আর বিশ্বের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

রবিবার (২২ জুন) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানান, “আমি আজই মস্কো যাচ্ছি। আগামীকাল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক হবে।”

এর কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান ইরানের ফোর্ডো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “এই স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে।”

তবে বিভিন্ন স্যাটেলাইট ছবি ও ইরানি সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এসব পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর গভীরে থাকা মূল কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, বরং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আব্বাস আরাকচি রাশিয়াকে ইরানের “কৌশলগত অংশীদার” হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “ইরান ও রাশিয়া সবসময় একে অন্যের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়।” তিনি জানান, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে, যেখানে লাভরভ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে আগ্রাসন বলে উল্লেখ করেন এবং ইরানকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ একাধিক পোস্টে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, “এই হামলা শুধু ব্যর্থই হয়নি, বরং এটি পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে অনেক দেশই প্রস্তুত রয়েছে।” যদিও তিনি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

মেদভেদেভ বলেন, “মার্কিন হামলা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা থামাতে পারেনি। বরং এটি ইরানকে আরও বেশি পারমাণবিক কার্যক্রমে উৎসাহ দিচ্ছে।” তিনি সরাসরি বলেন, “এখন আমরা বলতেই পারি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে যাচ্ছে।”

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, “যে মানুষ একসময় শান্তির পুরস্কারের দাবিদার ছিল, সেই ট্রাম্প এখন নতুন এক যুদ্ধ শুরু করে ফেলেছেন। তিনি এখন নোবেল শান্তি পুরস্কারের কথা ভুলেই যেতে পারেন।”

মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেন, এই পরিস্থিতির ফলে ইসরায়েলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ছড়াতে পারে এবং যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হয়ে স্থলযুদ্ধে পরিণত হতে পারে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ সমাধানে কাজ করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এই হামলাকে “অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক” বলে নিন্দা করেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে.

×