ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ৮ মে ২০২৪; আপডেট: ১২:১১, ৮ মে ২০২৪

২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট

এ স্থগিতাদেশ পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকবে

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৬ সালে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের যে পরীক্ষা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সম্প্রতি তা বাতিল করা হয়। যে শিক্ষকরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের পুরো চাকরির সময়কালের বেতন ১২ শতাংশ সুদসহ ফেরত দেওয়ার রায়ও দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে সে রায়ের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এ স্থগিতাদেশ পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকবে।

মঙ্গলবার (৭ মে) সুপ্রিম কোর্ট বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের বেতন এখনই ফেরত না দিতে বললেও, ‌রায়ে ভবিষ্যতে যদি এটা প্রমাণিত হয় যে কেউ অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পেয়েছেন, তবে তাকে বেতন ফেরত দিতে হবে।

আরও পড়ুন : প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনে তারকারাও সমান দায়ী: সুপ্রিম কোর্ট

কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) দুর্নীতির যে তদন্ত করছিল সেটি তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে এমন নির্দেশও দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

চাকরি হারা শিক্ষকদের কয়েকজন চাকরি ফেরত পাওয়ার দাবিতে কলকাতার শহীদ মিনারে অনশন করছিলেন গত ছয় দিন ধরে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে সন্ধ্যায় তারা অনশন ভেঙেছেন।

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন, সেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই ২০১৬ সালে চাকরি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন। এই চাকরি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে এখন জেলে আছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জীসহ রাজ্যের শীর্ষ শিক্ষা কর্মকর্তারা। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পার্থ চ্যাটার্জীর বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতা মুখার্জীর ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি ভারতীয় রুপি নগদ এবং কয়েক কোটি টাকা মূল্যের গয়না উদ্ধার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একাধিক পক্ষের পিটিশনগুলো নিয়ে মঙ্গলবার সারাদিন শুনানি চলে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, নিয়োগের তালিকা থেকে কি যোগ্য ও অযোগ্য আলাদা করে বাছাই করা সম্ভব? যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া ভুল হবে। আদালতকে আরও মাথায় রাখতে হবে যে নবম-দশম শ্রেণির এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করলে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যহত হবে। তাই যোগ্য ও অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব ধরে নিয়ে এই আদালতের সামনে এখন দায়িত্ব হলো, তার মাপকাঠি স্থির করা।

পশ্চিমবঙ্গে ২০১৬ সালে যে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে এবং ২২শে এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এক ধাক্কায় পুরো নিয়োগই বাতিল করে দেয়। ওই রায়ের কারণে হঠাৎ করেই চাকরি হারিয়ে পথে বসেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। এদের মধ্যে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেমন আছেন, তেমনই আছেন শিক্ষাকর্মীরা।

এবি 

সম্পর্কিত বিষয়:

×