ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শিশুর মুখ দিয়ে দুধ বের হওয়া কি বিপদের ইঙ্গিত? ডা. তামান্না ফেরদৌস যা বললেন

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪৫, ৮ জুন ২০২৫

শিশুর মুখ দিয়ে দুধ বের হওয়া কি বিপদের ইঙ্গিত? ডা. তামান্না ফেরদৌস যা বললেন

নবজাতক শিশু বুকের দুধ খাওয়ার পর হঠাৎ মুখের কোণা দিয়ে দুধ বের করে ফেলে—এ দৃশ্য অনেক মায়ের কাছেই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ বারবার এই ঘটনা ঘটায় বলে চিন্তিত হয়ে পড়েন, সন্তান কি অসুস্থ? ভবিষ্যতে বড় কোনো সমস্যা হবে না তো?

এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ ডা. তামান্না ফেরদৌস জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ও আশ্বস্তকর তথ্য। তিনি বলেন, এই ঘটনাকে সাধারণত স্পিটিং আপ বলা হয়, যাকে আমরা বাংলায় অনেক সময় দুধ বমি বলি। তবে এটি প্রকৃত বমি নয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একেবারে স্বাভাবিক একটি শারীরিক প্রতিক্রিয়া।

কেন হয় এই ‘দুধ বমি’?

ডা. তামান্না জানান, বাচ্চারা বুকের দুধ খাওয়ার সময় কিছু পরিমাণে গ্যাসও গিলে ফেলে। অনেক সময় এই গ্যাস যদি শরীর থেকে ঠিকভাবে বের না হয়, তাহলে তা পেটের ভেতরে জমা হয় এবং চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপের ফলেই খাওয়া দুধ মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

একটি অংশ পাকস্থলী পর্যন্ত গেলে সেখানকার এসিডের কারণে দুধটি জমে দইয়ের মত হয়ে যায় এবং তখন গন্ধযুক্ত ও গাढ़া রঙের দেখা যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় একেবারে সাদা তরল দুধ বেরিয়ে আসছে, এটি ঘটে যখন অতিরিক্ত দুধ বাচ্চা মুখে জমিয়ে রাখে এবং গিলতে না পেরে তা মুখের কোণা দিয়ে বেরিয়ে আসে।

চিন্তার কিছু আছে কি?

“না,” বলছেন ডা. তামান্না। কারণ এটি স্বাভাবিক ঘটনা এবং অধিকাংশ বাচ্চারই হয়ে থাকে। ছয় মাস বয়সের পরে যখন তারা বসতে শেখে ও বাড়তি খাবার খেতে শুরু করে, তখন এই সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে যায়।

তিনি আরও বলেন, এটি অসুস্থতা জনিত বমি নয়। সাধারণ বমি হলে শিশুর পেটের পেশি সংকুচিত হয়, বাচ্চা কাঁদে, দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চাপ সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্পিটিং আপ একেবারেই ভিন্ন—এটি সহজেই, কোনো চাপ ছাড়াই মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে এবং এতে শিশুর কোনো শারীরিক ক্ষতি হয় না।

করণীয় কী?

  •  শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পরে কিছুক্ষণ কোলে নিয়ে সোজা করে রাখতে পারেন
  • বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুকে সঠিকভাবে পজিশন করে দিন
  • খাওয়ানোর পরে হালকা করে পিঠে থাপ দিয়ে গ্যাস বের করে দিন

ডা. তামান্না ফেরদৌসের ভাষ্য অনুযায়ী, “এই দুধ বমি নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কিছু নেই। শিশুর ওজন ঠিক থাকলে এবং অন্য কোনো উপসর্গ না থাকলে এটা একেবারেই স্বাভাবিক।”

মিমিয়া

×