
মেডিকেল শিক্ষার্থী
মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। মেডিকেল কলেজের পরীক্ষা ব্যবস্থায় নতুন করে প্রণীত ‘সিজিপিএ’ পদ্ধতি বাতিল করে পুরোনো ‘ক্যারিঅন’ পদ্ধতি বহালের যে দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেয় বিএমডিসি।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিএমডিসিতে আয়োজিত এক সভায় ক্যারি অন পুনর্বহাল ও সিজিপিএ পদ্ধতি বাতিল করার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বিকেলের মধ্যে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
বিএমডিসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, মেডিকেল কলেজের পরীক্ষায় আগের ক্যারিঅন পদ্ধতি বহাল থাকছে। সিজিপিএ পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছি। বিকেলের মধ্যে এ বিষয়ে নোটিশ জারি করা হবে।
সম্প্রতি মেডিকেল শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতি সংশোধনের উদ্যোগ নেয় বিএমডিসি। ক্যারিঅন পদ্ধতি বাতিল করে সাধারণ শিক্ষার মতো সিজিপিএ গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল শিক্ষার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভাবনাকে আমলে নিতে রাজি নয় প্রতিষ্ঠানটি। তাদের দাবি, চিকিৎসা শিক্ষার সার্বিক ভালোর দিক বিবেচনা করে নতুন কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের চিন্তা-ভাবনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া সম্ভব না।
এর স্বপক্ষে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, মেডিকেলে নম্বর প্রদানে আদর্শ কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। একজন শিক্ষক পছন্দের শিক্ষার্থীকে ইচ্ছানুযায়ী নম্বর দিতে পারেন। শিক্ষকের অপছন্দ হওয়ায় অনেক ভালো শিক্ষার্থীকেও ফেল করিয়ে দেওয়ার বহু অভিযোগ আছে। এই অবস্থায় সিজিপিএ পদ্ধতিতে ফল প্রকাশিত হলে ভালো কিছু হবে না। সিজিপিএ রাখতে তাহলে পুরো পরীক্ষাটাই লিখিত করে দেওয়া হোক।
তবে কর্তৃপক্ষের দাবি মানতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। সেজন্য কিছুদিন ধরেই ক্যারিঅন পুনর্বহাল ও সিজিপিএ পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিল বিভিন্ন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেয় তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ক্যারিঅন বাতিল ও সিজিপিএ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এতে তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অযৌক্তিক এ সিদ্ধান্ত থেকে না সরে আসা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিএসডিসির নতুন পদ্ধতির প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, কর্তৃপক্ষ নতুন সিদ্ধান্তের পক্ষে একটাই যুক্তি দেখাতে পারছেন, সেটা হলো- সিজিপিএ পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে যেতে সুবিধা হবে। অথচ প্রতি বছর প্রায় ১৫ হাজার মেডিকেল শিক্ষার্থী ডাক্তার হয়ে বের হচ্ছেন। তাদেরকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলে দেশের মানুষকে কে সেবা দেবে। এতে শুধু জটিলতা বাড়বে। শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত।
গত রবিবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করার সময় শিক্ষার্থীরা ডা. মো. লিয়াকত হোসেনের কাছে দাবি উপস্থাপন করে স্মারকলিপি জমা দেন। লিয়াকত হোসেন সাত কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।
এমএস