
ছবিঃ সংগৃহীত
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার মধ্যরাতে গোপনে দেশত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। জনরোষ এড়াতে তিনি ছদ্মবেশে—লুঙ্গি, গেঞ্জি ও মুখে মাস্ক পরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে তিনি সেখানে পোশাক পরিবর্তন করে প্যান্ট-শার্ট পরেন এবং থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে (TG340) করে দেশ ছাড়েন।
বিশেষ সূত্র জানায়, রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে তার ব্যক্তিগত গাড়ি বিমানবন্দরে পৌঁছালে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি আটকে দেন। পরে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এসে জানান, আবদুল হামিদের বৈধ বহির্গমন অনুমোদন রয়েছে। এরপর কঠোর গোপনীয়তায় তাকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে নেওয়া হয়। তাকে ইমিগ্রেশন ছাড়াই কূটনৈতিক মর্যাদার লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিমানে তোলা হয়।
সূত্র বলছে, আবদুল হামিদকে বিমানবন্দরের ডেপুটি সিকিউরিটি অফিসারের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উচ্চপর্যায়ের অনুমোদনের পর তাকে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া ছাড়াই বিশেষ ব্যবস্থায় বিমানে তুলে দেওয়া হয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাবেক রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী ছিলেন তার ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ডা. এনএম নওশাদ খান। তাদের দু’জনের সাধারণ পাসপোর্ট থাকলেও আবদুল হামিদ ব্যবহার করেন রাষ্ট্রপতি থাকাকালে ইস্যুকৃত কূটনৈতিক পাসপোর্ট (ডি০০০১০০১৫), যার মেয়াদ রয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।
এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কেন তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট এখনো বৈধ রয়েছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের লাল পাসপোর্ট ইতোমধ্যে বাতিল হয়েছে। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান আইনে সাবেক রাষ্ট্রপতিদের পাসপোর্ট নিয়ে স্পষ্ট কোনো বিধান নেই। ফলে স্বরাষ্ট্র বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা না আসায় তার পাসপোর্ট এখনো বৈধ রয়েছে।
বিমানবন্দরে দায়িত্বরত একাধিক সংস্থার সদস্যরা জানান, বিমান ছাড়ার আগে ভিআইপি টার্মিনাল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা জারি ছিল। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি এতটাই গোপনে পরিচালিত হয় যে, বিমানবন্দরের সাধারণ কার্যক্রমে এর প্রভাব পড়ে না।
প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা গেছে, বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে রাজু নামে এক কর্মকর্তা আবদুল হামিদের বোর্ডিং কার্ড সংগ্রহ করেন এবং তিনি নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ইমিগ্রেশন কক্ষে না গিয়েই ফ্লাইটে ওঠেন। তার টিকিটে গন্তব্য ছিল দিল্লি, যদিও প্রাথমিকভাবে ব্যাংকক দেখানো হয়েছিল। দেশে ফেরার জন্য ১৬ জুনের টিকিটও বুক করা রয়েছে।
এই ঘটনার পর দেশত্যাগের বৈধতা, গোপনীয়তা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাবেক রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/18jrkP7RPd/
মারিয়া