
বলিউডের জনপ্রিয় মিউজিক ভিডিও ‘কাঁটা লাগা’ দিয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পাওয়া অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা মারা গেছেন। মাত্র ৪২ বছর বয়সে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (২৭ জুন) গভীর রাতে মুম্বাইয়ে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
শেফালির অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে ভারত ও বাংলাদেশজুড়ে তাঁর অগণিত ভক্তদের মাঝে।
শেফালিকে বেলভিউ মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে তার দেহ কুপার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ ও ফরেনসিক টিম। শেফালির মুম্বইয়ের আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী শত্রুঘ্ন জানান, রাত ১০:৩০ নাগাদ শেফালিকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ আগে রাত ৯টার দিকে তার স্বামী পরাগ ত্যাগী মোটরবাইকে করে বাড়িতে আসেন।
রাত থেকেই দু’টি মোবাইল ফরেনসিক ভ্যান অভিনেত্রীর বাসায় অবস্থান করেছে তবে এখনও কোন তথ্য জানা যায় নি।
একটি সাক্ষাৎকারে শেফালি জানিয়েছিলেন, কাঁটা লাগার পর তার ক্যারিয়ার যখন শিখরে ওঠার কথা, তখনই ধীরে ধীরে বলিউড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন তিনি। এর পেছনে ছিল এক নির্মম বাস্তবতা—শেফালি দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগে।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে পরীক্ষার চাপ থেকে তার শরীরে প্রথম খিঁচুনি দেখা দেয়। বলিউডের চাপে এই অসুখ আরও জটিল হয়ে ওঠে। স্টেজ পারফর্মেন্স, ব্যাকস্টেজ কিংবা রাস্তায় হাঁটার সময়—যেকোনো মুহূর্তে তিনি আক্রান্ত হতেন খিঁচুনিতে।
২০০৪ সালে গায়ক হারমিত সিংকে বিয়ে করলেও ২০০৯ সালে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায় মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে। পার্সোনাল ও প্রফেশনাল জীবনের চাপ একসঙ্গে সামলে উঠতে না পেরে তিনি অভিনয় থেকে দূরে সরে যান।
শেফালি জরিওয়ালার জীবন ছিল এক সাহসী যোদ্ধার মতো। অসুখের সঙ্গে লড়ে ফের লাইমলাইটে ফিরেছিলেন। তাঁর এই হঠাৎ বিদায়ে একরাশ প্রশ্ন, একরাশ শূন্যতা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টেই তার মৃত্যু হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, হয়তো তার দীর্ঘদিনের মৃগী রোগই এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত। তবে তার মৃত্যুর পিছনে কোনো অন্য ঘটনা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সানজানা