
জাতীয় কবির দ্রোহ, প্রেম, দেশাত্মবোধসহ নানা আঙ্গিকের গান নিয়ে মঞ্চ মাতায় দেশের জনপ্রিয় দশটি ব্যান্ডদল
দুপুরের পর থেকেই ঝরেছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি, কখনোবা মুষলধারে। তবে এই বৃষ্টির বিড়ম্বনাকে পাশ কাটিয়ে নজরুলের ঐশ্বর্যময় সুরবাণীর টানে গানপ্রেমীরা জড়ো হয়েছিলেন রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে। সংখ্যায় অল্প হলেও এই সুররসিকদের আগমনে আয়োজন হয়েছে স্বার্থক। সন্ধ্যায় শুরু হওয়া আয়োজনে সময়ের সঙ্গে বেড়েছে সুররসিকদের আনাগোনা। তাদের হৃদয়ে ভালোলাগার অনুভব ছড়িয়ে শনিবার অনুষ্ঠিত হলো ‘নজরুল রক কনসার্ট’। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সংগীতাসরের আয়োজন করে নজরুল ইনস্টিটিউট।
বৈরী আবহাওয়ায় কনসার্টটি হবে কি হবে না এ নিয়ে দোটানায় ছিল নজরুলভক্তরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মোহময় এই গানের আসর। জাতীয় কবির দ্রোহ, প্রেম, দেশাত্মবোধসহ নানা আঙ্গিকের গান নিয়ে মঞ্চ মাতায় দেশের জনপ্রিয় দশটি ব্যান্ডদল। দলগুলো হলো সোলস, দলছুট, শিরোনামহীন, ডিফরেন্ট টাচ, রেবেল, ওয়্যারফেজ, আর্ক, মিজান অ্যান্ড ব্রাদার্স, ব্ল্যাক ও এফ মাইনর।
ব্যান্ডদল সোলস পরিবেশন করে জাতীয় কবির গান ‘ শিকল পরা ছল মোদের শিকল পরা ছল’। সুরেলা এই সফরে দলছুট পরিবেশন করে ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’। শিরোনামহীন গেয়ে শোনায় ‘কা-ারী হুঁশিয়ার’। ডিফরেন্ট টাচ পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’। ব্যান্ডদল রেবেল গেয়ে শোনায় ‘বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা শির উঁচু করি মুসলমান’। ওয়্যারফেজ পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’। আর্ক পরিবেশন করে ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ এলোরে দুনিয়ায়’। মিজান অ্যান্ড ব্রাদার্স গেয়ে শোনায় ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’। ব্ল্যাক পরিবেশন করে ‘পরদেশী মেঘ’ শীর্ষক সংগীত। ব্যান্ডদল এফ মাইনরের পরিবেশনায় ‘জয় হোক’ গানের সুরে সংগীতাসরের সমাপ্তি হয়।
প্রতিটি পরিবেশনা যেন শ্রোতারা হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছেন। সিক্ত হয়েছেন নজরুলের কালজয়ী সুরবাণীর বৈচিত্র্যময়তায়। তাই কখনো বা উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন। আবার কখনো নীরব হয়ে চুপটি করে শুধুই গান শুনেছেন। কথা ও সুরের ভিন্নতায় অনুষ্ঠানস্থলে একেক সময় একেক রকম আবহ তৈরি হয়।
প্রাচ্যনাটের কিনু কাহারের থেটার নাটকের মঞ্চায়ন ॥ দেশের জনপ্রিয় নাট্যদল প্রাচ্যনাটের প্রযোজনা ‘কিনু কাহারের থেটার’। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। মনোজ মিত্রের রচনা থেকে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। নাটকটির কাহিনীতে রাজনীতির নামে সুবিধাভোগী শ্রেণির ফায়দা নেওয়ার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক তৌফিকুল ইসলাম ইমন বলেন, হাস্যরসাত্মক গল্পের ভেতর দিয়ে সমাজ-বাস্তবতা তুলে ধরতে চেয়েছি নাটকটির মাধ্যমে। দেশে বিশ্বজিত হত্যার ঘটনায় আমরা কী দেখলাম, জনসমক্ষে একজনকে কুপিয়ে মারা হলো, কিন্তু সর্বোচ্চ সাজা পেল মাত্র দুজন। বিচারহীনতার সময়ে খুব বেশি সরাসরি নয়, পরোক্ষে মানুষকে যদি একটু সচেতন করা যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
কিনু কাহারের থেটার নাটকে অভিনয় করেছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম, সানজিদা প্রীতি, মনিরুল ইসলাম রুবল, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব, বিলকিস জাহান জবা, রফিকুল ইসলাম, রিফাত আহমেদ নোবেল, ফুয়াদ বিন ইদ্রিস প্রমুখ।