
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে ১ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছুটি শুরু হতেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। তবে ক্যাম্পাসে রয়ে গেছে একদল নীরব সাথী -কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য নির্বাক প্রাণী, যারা সাধারণত শিক্ষার্থীদের দেওয়া খাবার কিংবা উচ্ছিষ্টাংশ খেয়েই বেঁচে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এসব প্রাণীদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এমন সংকটে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ববি’র একদল শিক্ষার্থী। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তারা ফান্ড কালেক্ট করে এসব প্রাণীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছে।
উদ্যোগটির মূল আয়োজক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অনন্যা আফরিন বলেন,
“আমার একটা পোষা কুকুর আছে, তাই এমন প্রাণীদের প্রতি আলাদা একটা টান অনুভব করি। ক্যাম্পাসে থাকলে প্রায়ই ওদের খাবার দিই। এবার ঈদের ছুটিতে যখন বুঝতে পারি ক্যাম্পাস ফাঁকা হয়ে যাবে, তখনই ভাবি এদের জন্য কিছু করা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আমার বিভাগের সিনিয়র ও ব্যাচমেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, এবং সবার সহযোগিতায় আমরা ফান্ড কালেক্ট করে ৭ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। যদি ভালো সাড়া পাই, তাহলে পুরো ছুটির সময়জুড়েই এই কার্যক্রম চালিয়ে যাব।”
উল্লেখ্য, প্রাণীদের জন্য এই খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে চালানো হচ্ছে।
এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, ছুটি মানেই দায়িত্ব ফুরিয়ে যায় না। বরং এমন সময়েই মানবিকতা ও সহানুভূতির প্রকৃত পরীক্ষা হয়। ববি’র এই শিক্ষার্থীরা সেটাই করে দেখাচ্ছেন নির্বাক প্রাণীদের প্রতিও আমাদের দায়িত্ব রয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী আরও বলেন, “ছুটি মানেই দায়িত্ব শেষ নয়। বরং এমন সময়েই মানবিকতা ও সহানুভূতির আসল পরীক্ষা হয়। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাক প্রাণীদের প্রতিও আমাদের দায়িত্ব আছে, এবং সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।”
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের এ মানবিক উদ্যোগ ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিদিন নির্ধারিত সময় ধরে এসব প্রাণীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
Jahan