
ছবি: সংগৃহীত
বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, অভিবাসন অথবা চাকরির আবেদন করতে গেলে সবচেয়ে আগে যেটি মূল্যায়ন করা হয়, তা হলো ইংরেজি ভাষায় কথা বলা, বোঝা, পড়া ও লেখার সক্ষমতা। আর এ দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে কিছু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত টেস্ট রয়েছে। তবে এসব টেস্ট যেমন ব্যয়বহুল, তেমনি সময়সাপেক্ষও। সময় যদি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আসে, তাহলে ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের বিকল্প উপায় হিসেবে 'পিয়ারসন টেস্ট অব ইংলিশ' বা পিটিই (PTE) হতে পারে একটি চমৎকার বিকল্প। এ টেস্টের ফলাফল শুধু দ্রুত পাওয়া যায় না, বরং এটি বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃতও।
পিটিই (PTE) কী?
পিটিই হলো একটি আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা, যা পিয়ারসন নামক বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশে এ টেস্টের যাত্রা শুরু হয়। এটি সম্পূর্ণরূপে কম্পিউটারভিত্তিক, অর্থাৎ নির্ধারিত টেস্ট সেন্টারে বসে ডেস্কটপ কম্পিউটারে একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষাটি নেওয়া হয়।
কত দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়?
পিটিই টেস্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা এর দ্রুত ফলাফল প্রদান। পরীক্ষার তিন দিন আগে পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা যায়, এমনকি বিশেষ প্রয়োজনে দুই দিন আগেও বুকিং সম্ভব (সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি প্রযোজ্য)। ২৪ ঘণ্টা থেকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যায়, যা অনেক সময় পরীক্ষা দেওয়ার দিন বা পরদিনই প্রাপ্ত অ্যাকাউন্টে আপলোড হয়ে যায়। অনলাইনে ঘরে বসে রেজিস্ট্রেশন করা যায় যদি আপনার আন্তর্জাতিক ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড থাকে। এছাড়া ঢাকার উত্তরা বা ধানমণ্ডি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সেন্টার থেকেও ভাউচার কোড কিনে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব। রেজিস্ট্রেশন ফি ২০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫০০০ টাকা।
কে কাদের জন্য?
পিটিই স্কোর বিশ্বের ৯০ শতাংশের বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রহণযোগ্য। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ নানা দেশে উচ্চশিক্ষা, স্থায়ী বসবাস এবং ভিসার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পিটিই স্কোর গ্রহণ করা হয়। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে সব ধরনের ভিসা আবেদনে এটি আইএলটিএসের সমমর্যাদায় গ্রহণযোগ্য। ইংল্যান্ডে শিক্ষাগত ভিসার জন্য আলাদাভাবে ‘পিটিই ভি ইউ ই’ সংস্করণে পরীক্ষা দিতে হতে পারে, তবে পরীক্ষার কাঠামো একই।
পরীক্ষার কাঠামো কেমন? পিটিই পরীক্ষাটি মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত—
পার্ট ১: স্পিকিং ও রাইটিং
পার্ট ২: রিডিং
পার্ট ৩: লিসেনিং
মোট ৯০ নম্বরের এ পরীক্ষা সাধারণত টানা তিন ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়। পিটিই’র অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো—একটি মডিউলের কিছু টাস্ক অন্য মডিউলের স্কোরেও প্রভাব ফেলে। যেমন, স্পিকিং অংশে আপনাকে কিছু প্যাসেজ জোরে পড়তে কিংবা শোনা বাক্য পুনরায় বলতে হতে পারে, যেখানে রিডিং ও লিসেনিংয়ের দক্ষতাও পরোক্ষভাবে যাচাই হয়। এতে ক্রস-মডিউলার স্কোরিং হয়।
কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
পিটিই পরীক্ষার প্রস্তুতি তুলনামূলকভাবে কারিগরি এবং কাঠামোবদ্ধ। তাই একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে কোর্স করা সবচেয়ে কার্যকর। বাংলাদেশে বর্তমানে কিছু প্রতিষ্ঠান পিটিই প্রস্তুতির জন্য ভালো মানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। নিজে নিজে প্রস্তুতি নিতে চাইলে পিটিই সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে Pearson-এর Practice Test Plus: PTE Academic বইটি সহায়ক হতে পারে।
বিশদ জানতে পিয়ারসনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন: https://pearsonpte.com