ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হলে উঠলেন সেই ইবি শিক্ষার্থী ফুলপরী

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ১২ মার্চ ২০২৩

হলে উঠলেন সেই ইবি শিক্ষার্থী ফুলপরী

ইবি শিক্ষার্থী ফুলপরী ও তার বাবা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন ২৭ দিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে নতুন হলে উঠেছেন। 

রবিবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। পরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ৫০১ নম্বর রুমে ওঠেন। হলে রেখে যাওয়ার সময় ফুলপরীর মাথার ওপর হাত রেখে দোয়া করেন তার বাবা আতাউর রহমান। 

ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, মেয়েকে রাখতে ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। মেয়ে আজ থেকে হলে থাকবে। আজ ক্লাস করার সুযোগ হয়নি। আগামীকাল থেকে ক্লাস শুরু করবে।

ফুলপরী খাতুন বলেন, আমার মধ্যে কোনো ভয়ভীতি কাজ করছে না। আমি আবার আগের মতো ক্লাস শুরু করতে চাই।

এর আগে উচ্চ আদালত থেকে পছন্দের হল বরাদ্দের নির্দেশের পর গত ৪ মার্চ (শনিবার) ক্যাম্পাসে এসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল বরাদ্দের জন্য আবেদন করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। পরে ওই হলের একটি কক্ষ তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। হল বরাদ্দ পেয়ে সেদিন বাড়ি ফিরে যান তিনি।
 
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান বলেন, আবেদন করার পর সেদিনই একটি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেদিন ওই কক্ষে কিছু মালামাল রেখে বাড়ি চলে যায় ওই ছাত্রী। আজ সে হলে উঠেছে। ক্যাম্পাসে এলে চিফ মেডিকেল অফিসারকে বলা হয়েছে তার স্বাস্থ্যগত বিষয় পরীক্ষা করতে। হলে এলে যেন কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয় বিষয়টি দেখভাল করব। আমি ওই কক্ষের অন্যদের ডেকে কথা বলেছি যেন ওর কোনো সমস্যা না হয়।

এদিকে গত ১২ ফেব্রুয়ারির পর থেকে প্রায় এক মাস ক্লাস করতে পারেননি নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন। এই সময়ে তার সহপাঠীরা নিয়মিত ক্লাস করলেও তাকে বাড়ি থেকে ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়াতে হয় নির্যাতনের বিচার পেতে। ফলে অন্যদের থেকে একাডেমিকভাবে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে অতিথি হিসেবে উঠে ক্লাস শুরু করেন ফুলপরী খাতুন। পরে ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৩ তারিখ সকালে ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যান তিনি। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ দিতে ক্যাম্পাসে আসেন। তদন্ত কমিটির কাছে বক্তব্য দিতে ও হল পছন্দ করতে কয়েক দফা ক্যাম্পাসে এলেও ক্লাসে ফেরা হয়নি তার। 

এ বিষয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, আমরা ওই ছাত্রীর খোঁজ-খবর রাখছি। একাডেমিক কমিটির মিটিংয়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ওই ছাত্রী ক্লাসে এলে যেন কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় না পড়েন এবং কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় এ নিয়ে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া গত মাসে ক্লাসে অংশ না নিলেও সে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আমরা বিষয়টি দেখব।

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×