
কুড়িগ্রাম জেলায় চলছে বোরোধান কাটা মাড়াইয়ের মৌসুম। কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়ছে তাদের ধান নিয়ে। এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফসলি জমিতে দুর্বৃত্তরা আগাছা নাশক কীটনাশক স্প্রে করে জমির ধান পুড়ে দিচ্ছে। দিশেহারা হচ্ছে কৃষকরা। বিচারের দাবিতে ঘুরছে বিভিন্ন জায়গায়। জেলার সাধারণ কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এসব ঘটনায়।
কুড়িগ্রামে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই মুন্সীপাড়া গ্রামের ফারুক ইসলাম তার ৫৫ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ করেন। ফসলও অনেক ভালো হয়েছে। কয়েক দিন পরেই পাকা ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছিল সে। কিন্তু গত ১২ এপ্রিল রাতের আঁধারে একদল দুর্বৃত্ত জমিতে আগাছা নাশক জাতীয় পদার্থ দিয়ে স্প্রে করে। পুরো জমির ধান পুড়ে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা কৃষকের সেচ পাম্পও চুরি করে নিয়ে যায়। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবাদ করেছিল কৃষক ফারুক। এ ঘটনায় পুরো পরিবার এখন দিশেহারা।
অন্যদিকে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের শোলাগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা দারিদ্র কৃষক হাবিবুর রহমান। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ করেছেন ৪০শতক জমিতে। আধা পাকা ধানে রাতের আধারে আগাছা নাশক জাতীয় পদার্থ দিয়ে পুরো ফসল নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় হাবিবুর রহমান বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে তিনি জানান দুর্বৃত্তরা আরও একবার ফসল নষ্ট করেছিল।
কৃষক ফারুক ইসলাম জানান, এনজিও ঋণ নিয়ে ৫৫শতক জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ধান কাটার সময় হয়ে আসার মুহূর্তেই পারিবারিক বিবাদের জন্য বিপক্ষরা আমার জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। এই বিষয়ে আদালতে মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই।
কৃষক হাবিুর রহমান জানান, আমার ৪০শতক পাকা ধানে আগাছা নাশক বিষ দিয়ে ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এমনটি করেছে বিরোধীরা। আমি এর বিচার চাই।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান হাবিবুর ও রহিদুলের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ দীর্ঘদিনের। ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় গণ্যমান্য নিয়ে ১৫বারের অধিক মীমাংসা জন্য বসা হয়েছিল। কিন্তু ভিলেজ পলিটিক্সের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আদালতে জমিজমা ও ফসলহানীর মামলা চলমান রয়েছে। ফসলহানি যারা করেছে তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান জানান, পারিবারিক কোন্দল থেকে কুড়িগ্রামে ফসলহানীর মতো ঘৃণ্য অপরাধ বেড়েছে। চলতি বোরো মৌসুমেও জেলার উলিপুর, রাজারহাট এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ১শ৫০শতক আধা পাকা বোরো ধান দুর্বৃত্তরা নষ্ট করেছে। ফসলহানীর মামলা গুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা গেলে এমন অপরাধ কমে আসবে বলে মনে করেন।
সজিব