ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়তে পারে দেশের বাজারে

বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:২১, ৫ মার্চ ২০২৩

বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান

টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে

টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। এক সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে। বিশ্ববাজারে এমন দাম বাড়ায় দেশের বাজারে যে কোনো মুহূূর্তে এ ধাতুর দাম বাড়ানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণ করার দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি বৈঠক করে সোনার দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘোষণা দেয়। বাজুস সূত্রে জানা গেছে, দেশের বাজারে সোনার দাম পুনর্নির্ধারণের পর এরইমধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।

বিশ্ববাজারে সোনার দামে এমন বড় উত্থান হওয়ায় দেশের বাজারে বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, আগামীকাল সোমবার বিকেলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে বৈঠক করবে। জরুরি মনে করলে এর আগেও কমিটি বৈঠকে বসতে পারে। বৈঠকের পর যে কোনো মুহূূর্তে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে।
বিশ্ববাজারে সোনার লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৮১০ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে ১ হাজার ৮৫৫ দশমিক ২৫ ডলারে উঠে এসেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে সোনার দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ বা ৪৫ দশমিক ২৫ ডলার। এরমধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই দাম বেড়েছে ১৯ দশমিক ২৫ ডলার। যোগাযোগ করা হলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, আমরা দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর পর এরইমধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্সের দাম ৫০ ডলারের মতো বেড়েছে।

তবে আমরা সোনার দাম নির্ধারণ করি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে বিশ্ববাজারের প্রভাবটা এখনো সেভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তাই আগামী সোমবারের বাজারচিত্র দেখবো। তারপর সোমবার বিকেলে বৈঠক করে সোনার দাম পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেব। তিনি বলেন, যদি বিশ্ববাজারে সোনার দাম এমনই থাকে বা দাম আরও বাড়ে, তার ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব দাম কত বাড়ানো যায়। অথবা যদি বিশ্ববাজারে দাম কমে সেটাকেও আমরা বিবেচনায় নেব দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে।

এর আগে বিশ্ববাজারে এক মাস ধরে টানা দরপতন হয় সোনার। এতে এক মাসের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১৩৫ ডলার কমে যায়। বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে সম্প্রতি দেশের বাজারে দু’দফায় সোনার দাম কমানো হয়েছে। অবশ্য তার আগে টানা ছয় দফা দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছে সোনা। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দাম বাড়ার মাধ্যমে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা।

এর আগে কখনো দেশের বাজারে সোনার ভরি ৯৩ হাজার টাকা স্পর্শ করেনি। রেকর্ড দাম হওয়ার পর ফেব্রুয়ারিতে দু’দফা দাম কিছুটা কমানো হয়। সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৯১ হাজার ৯৬ টাকা করা হয়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৮৭ হাজার ১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ৬৯৮ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ১৬৯ টাকা করা হয়।

সোনার দামে বিশ্ববাজারের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৮২৪ ডলার। নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দফায় দফায় সোনার দাম বাড়ে। এতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন প্রতি আউন্স সোনার দাম ১ হাজার ৯৫০ ডলারে উঠে যায়। এরপর থেকেই দাম কমতে শুরু করে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৮১০ ডলার। বিশ্ববাজারে দাম বাড়তে থাকায় চলতি বছর দেশের বাজারে প্রথম সোনার দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয় ৮ জানুয়ারি।

সে সময় সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের (১১.৬৬৪ গ্রাম) এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজার ৭৪৬ টাকা করা হয়। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২১৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৬০৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ১ হাজার ৯২৪ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ২৪১ টাকা করা হয়।

×