
লুব্রিকেন্ট আমদানিতে অর্থ পাচারের সম্ভাবনা
ইঞ্জিন অয়েলের আমদানি ক্ষেত্রে ন্যূনতম অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হবার সম্ভাবনা রয়েছে। গত অর্থবছরে দেশে প্রায় ৪ কোটি কেজি লুব্রিকেন্ট আমদানি হয়েছে। ন্যূ নতম আমদানি মূল্য ঘোষণা করলে-পণ্যের প্রকৃত মূল্য ন্যূনতম মূল্যমানের চেয়ে কম হলেও আমদানিকারকদের ৪৯% হারে শুল্ক ন্যূনতম মূল্যমান অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু ন্যূনতম মূল্য উঠিয়ে দিলে ব্যবসায়ীরা আমদানি মূল্য কম দেখাবে ফলে সরকার রাজস্ব হারাবে।
জানা গেছে, পূর্বে এই ভ্যালুগুলো ছিল যথাক্রমে মিনারেল অয়েলের প্রতি কেজিতে ২.৫ ডলার। সেমি-সিনথেটিকের জন্য ৩.২ ডলার এবং ফুলি-সিনথেটিকের জন্য ৫ ডলার। এই ন্যূনতম মূল্যগুলো মূলত একটি রেফারেন্স হিসেবে কাজ করত, যার ফলে আমদানিকারকরা কম দামে ইনভয়েস দেখিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিতে পারতেন না। ফলে বাজারে একটি মান বজায় থাকত এবং সরকারও নিশ্চিত রাজস্ব আদায় করতে পারত। কিন্তু ন্যূনতম মূল্য উঠিয়ে দিলে এসব প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার অবসান হবে।
এতে একাধিক ক্ষেত্রে গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, রাজস্ব হারাবে সরকার। ন্যূনতম মূল্য বাতিলের ফলে আমদানিকারকরা এখন সিএফআর মূল্য ইচ্ছেমতো কমিয়ে ঘোষণা করতে পারবেন। এতে প্রতি কেজিতে সরকার আগের তুলনায় অনেক কম পরিমাণ শুল্ক ও ভ্যাট আদায় হবে। দীর্ঘমেয়াদে সরকার প্রতিবছর শত কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
ন্যূনতম মূল্য না থাকলে আমদানিকারকরা সহজেই বাস্তব মূল্যকে উপেক্ষা করে কম মূল্যের ইনভয়েস দেখাতে পারবেন। ফলে আন্ডার ইনভয়েসিং এর প্রবণতা বাড়বে। শুল্ক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নষ্ট হবে। এছাড়া অসচ্ছ আমদানি আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি দেশের করপোরেট বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে। কম শুল্ক ও দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা অনুমোদনহীন বা প্যারালাল রুটে নিম্নমানের পণ্য সহজেই বাজারে প্রবেশ করাবে। এতে দেশে ভালো পণ্যের বাজার নষ্ট হবে। যা দেশের লুব্রিকেন্ট শিল্পে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ বাজারে নিম্নমানের পণ্যে ছয়লাব হয়ে যাবে। কম শুল্কের সুবিধা নিয়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের ও অখ্যাত ইঞ্জিন অয়েল আমদানি করবে।