ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ইআরএফ-পলিসি এক্সচেঞ্জ কর্মশালা

বাংলাদেশে পরিবহন ব্যয় যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৫ জুন ২০২৫

বাংলাদেশে পরিবহন ব্যয় যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি

বাংলাদেশে পরিবহন ব্যয় যে কোনো দেশের তুলনায় বেশি

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, যে কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নাই। এর জন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। তিনি আরও বলেন, দেশে গত ১৬ বছরে বহু প্রতারণামূলক বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।বুধবার অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) আয়োজিত ‘কনডাক্টিভ অটোমাবাইল পলিসি ফর গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড কম্পিটিটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গাড়ি আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি মো. আব্দুল হক। আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ড. মাশরুর রিয়াজ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম।
মূল প্রবন্ধে মাশরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের লজিস্টিক (পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা) ব্যয় পৃথিবীর অন্যতম বেশি। এখন আমাদের লজিস্টিক ব্যয় অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি। এই অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে পারলে যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরি হবে তাতেই ২০ শতাংশ রপ্তানি বাড়বে। এই লজিস্টিকের অন্যতম উপাদান হচ্ছে উন্নত সড়ক এবং উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা। পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি গাড়ি আমদানি করতে হবে। তবে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নতুন গাড়ি পরিবেশবান্ধব তা টেকসই নয়।

বরং উন্নত প্রযুক্তির বা দেশের তৈরি করা পুরনো গাড়িও অনেক বছর পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব এবং উন্নত সেবা দেয় বলে মনে করেন তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিগত ১৬ বছরে আমরা এমন সব ফ্যালাসি (প্রতারণা) মূলক বিনিয়োগ করেছি, সেটা কর্ণফুলী টানেল হোক, এমন উচ্চ মূল্যের বিনিয়োগ করেছি যে ঋণের নামে আমরা মেট্রোরেল করতে যেয়ে এক টাকার জিনিসি ২০ টাকায় করেছি। আমরা তো পরিবেশের আরও বড় ক্ষতি করে ফেলেছি।

এসব উন্নয়ন করতে গিয়ে আমরা যে পরিমাণ অর্থনৈতিক দায় তৈরি করেছি যার পরিমাণ আমাদের জাতীয় ব্যয়ে সর্ববৃহৎ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে। এটাতো টেকসই নয়। দীর্ঘ মেয়াদে তো এটা চলনশীল নয়। আবার টেকসইও নয়। এখান থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে আমাদের। এখান থেকে দেশের অর্থনীতিকে বের করে আনার জন্য সমন্বিত অর্থনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এমনকি এটার জন্য রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো ল্প নেই বলে তিনি মনে করেন।  

দেশের অর্থনীতিকে এই দায় থেকে বের করে আনার জন্য সমন্বিত বহুমুখী নীতি গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ব্যয়গুলোকে এমনভাবে করতে হবে যাতে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।  বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, আমাদের দেশে পুরনো গাড়ি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ব্যাখা দিয়ে অতিরিক্ত আমদানি কর চাপানো আছে।

কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির তৈরি গাড়ি বিশেষ করে জাপানের মতো দেশের তৈরি পুরনো গাড়িও অনেক বছর ধরে পরিবেশবান্ধব থাকে। যেটা অনেক দেশের নতুন গাড়িও দিতে পারে না। সুতরাং জাপানসহ উন্নত দেশের প্রযুক্তির তৈরি ব্যবহৃত এবং পুরনো গাড়ি আমদানিবান্ধব নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন বারভিডার সভাপতি। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা।

×