ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

একদিনের বাচ্চা উৎপাদন করে চরম লোকসানে ব্রিডার্স ফার্মগুলো

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২২ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:৫৩, ২২ জুন ২০২৫

একদিনের বাচ্চা উৎপাদন করে চরম লোকসানে ব্রিডার্স ফার্মগুলো

ছবি: সংগৃহীত

দেশের পোল্ট্রি খাত এক চরম সংকটে পড়েছে। প্রতি সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির একদিনের বাচ্চা উৎপাদন করে গড়ে ৭৫ থেকে ৮০ কোটি টাকা লোকসান গুনছে ব্রিডার্স ফার্মগুলো। শুধু ব্রয়লার নয়, লেয়ার, সোনালী সহ অন্যান্য জাতের একদিনের বাচ্চা মিলিয়ে সপ্তাহিক লোকসানের পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে ১০০ কোটি টাকা।

এই বিপর্যয়কর অবস্থায় উদ্যোক্তারা বলছেন, বাজারে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য না থাকায় এমন ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। তারা সরকারের কাছে একটি সমন্বিত উৎপাদন ও বাজার তদারকি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।

ব্রয়লার খাতে ভয়াবহ লোকসানের কারণে খামারিরা নতুন করে বাচ্চা তুলতে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন। এতে করে বিপাকে পড়েছে দেশের প্রায় ৩৫টি ব্রিডার্স ফার্ম। যেখানে একেকটি ব্রয়লার বাচ্চার উৎপাদন খরচ পড়ে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, সেখানে বাজারদর নেমে এসেছে প্রতি পিস মাত্র ৩ টাকা। উদ্যোক্তারা জানান, বর্তমানে গড়ে প্রতি বাচ্চার দাম ১০ টাকারও কম।

একই অবস্থা ডিম উৎপাদন খাতেও। উদ্যোক্তারা জানান, একটি ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা। এতে খাদ্য, কার্টুন, পরিবহন, মান বাছাই, গ্রেডিংসব কিছুর খরচ যুক্ত থাকে। আবার কিছু ডিম মানে দুর্বল থাকায় বাদও দিতে হয়। ফলে খরচ আরও বেড়ে যায়।

পোল্ট্রি খাত সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা জানান, দেশে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১ কোটি ৬০ লাখ একদিনের বাচ্চার চাহিদা থাকলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি। এই অতিরিক্ত সরবরাহই মূলত দাম ধসে পড়ার কারণ।

বাজারে ডিম বা মুরগির দামের উঠানামা নিয়ে ‘সিন্ডিকেট’ অভিযোগ উঠলেও উদ্যোক্তারা তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। তাদের ভাষায়, ‘ডিম স্টক করা যায় না, বাচ্চা রাখা যায় নাএসব দ্রব্যের সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো বা কমানো সম্ভবই নয়।’

একজন উদ্যোক্তা বলেন, ‘আপনি ডিম পাড়া বন্ধ রাখতে পারেন না, উৎপাদিত বাচ্চাও রাখা যায় নাতা বিক্রি করতেই হয়। এমন পরিস্থিতিতে কেউ ইচ্ছে করলেও সিন্ডিকেট করতে পারবে না।’

এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তারা সরকারের কাছে একটি স্থায়ী সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন। তারা চান, সরকার, উৎপাদক ও ভোক্তা প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি পোল্ট্রি বোর্ড বা তদারকি কমিটি গঠন হোক, যারা সারাবছর উৎপাদন ও বাজার পর্যবেক্ষণ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রোটিনের ন্যায্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

একজন খামারি বলেন, ‘একটা বোর্ড হলে তারা উৎপাদন অনুযায়ী সপ্তাহিক তথ্য বিশ্লেষণ করে বলবেএই সপ্তাহে কত উৎপাদন হবে, চাহিদা কত, দাম কেমন হওয়া উচিত। এতে কেউ লোকসানে যাবে না, ভোক্তারাও হঠাৎ দামে ধাক্কা খাবে না।’

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=S2lCa1anVkU

রাকিব

×