ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অর্থসংকটে জাতিসংঘ: চাকরি হারাতে যাচ্ছে প্রায় ৭ হাজার কর্মী

প্রকাশিত: ১৬:৫৬, ৩০ মে ২০২৫

অর্থসংকটে জাতিসংঘ: চাকরি হারাতে যাচ্ছে প্রায় ৭ হাজার কর্মী

ছবি : সংগৃহীত

রয়টার্সের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, জাতিসংঘ সচিবালয় তাদের ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের বাজেট থেকে ২০ শতাংশ কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার ফলে প্রায় ৬,৯০০ জন কর্মচারীর চাকরি কাটা পড়তে পারে।

এই নির্দেশনায় কর্মীদের আগামী ১৩ জুনের মধ্যে কোথায় কীভাবে খরচ কমানো যাবে, তা বিস্তারিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। আর্থিক এই সংকটের পেছনে অন্যতম কারণ যুক্তরাষ্ট্র, যারা প্রতিবছর জাতিসংঘের মোট বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ অর্থায়ন করে থাকে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় জাতিসংঘের মানবিক সংস্থাগুলো ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া চলতি অর্থবছর ও বকেয়া মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের কাছে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার দেনা।

জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রক চন্দ্রমৌলি রামানাথন মেমোর লেখক হলেও, তিনি মার্কিন বকেয়া অর্থের বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ করেননি। তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই কর্তনগুলি মার্চ মাসে ইউএন৮০ নামে শুরু হওয়া একটি পর্যালোচনার অংশ।

তিনি বলেন, “২১শ শতকের বহুপাক্ষিক সহযোগিতার উপযোগী একটি জাতিসংঘ গড়ে তোলার, মানবিক কষ্ট লাঘবের এবং সবার জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ তৈরির এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ এটি। আমি এই সমষ্টিগত প্রচেষ্টায় আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি, যদিও সময়সীমা অত্যন্ত কঠোর।”

এই বাজেট ও জনবল কাটছাঁট ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে, যা জাতিসংঘের পরবর্তী বাজেট চক্রের সূচনা।

এ মাসে জাতিসংঘের কূটনীতিকদের সামনে প্রকাশ্য ব্রিফিংয়ে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, তিনি একটি বৃহৎ সংস্কারের চিন্তা করছেন—যার আওতায় বড় বড় বিভাগ একীভূত করা, অর্থ-সম্পদ পুনর্বিন্যাস এবং কর্মীদের সাশ্রয়ী শহরে স্থানান্তরও থাকবে। এতে কিছু সংস্থা একীভূত, কিছু ছোট করা, পুনরাবৃত্ত কাজ বন্ধ ও অপ্রয়োজনীয় আমলাতন্ত্র বাদ দেওয়া হতে পারে।

গুতেরেস বলেন, “এটি সঙ্কটের সময়, তবে একইসঙ্গে গভীর সম্ভাবনা ও দায়িত্বের সময়ও। ভুল করবেন না—সামনে কঠিন সিদ্ধান্ত অপেক্ষা করছে। সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া বা পিছিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা হতে পারে, কিন্তু সেই পথ এক প্রকার অচল।”

মূলত, যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়নভিত্তিক অর্থ না দেওয়ার কারণে জাতিসংঘের নগদ অর্থ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। চীনও বিলম্বে অর্থ পরিশোধ করে এই সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করছে। এ দুই দেশ জাতিসংঘ বাজেটের ৪০ শতাংশের বেশি যোগান দেয়।

এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন কয়েক শ’ মিলিয়ন ডলারের ইচ্ছাধীন অনুদান বাতিল করেছে, যার ফলে হঠাৎ করে ডজনখানেক মানবিক প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এসব প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের প্রস্তাবিত মার্কিন বাজেটে জাতিসংঘের অনেক কর্মসূচির (বিশেষ করে শান্তিরক্ষাবিষয়ক) বরাদ্দ বাদ দেওয়া হয়েছে কিংবা তা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে।

 

সূত্র - https://www.ndtv.com/world-news/un-may-cut-nearly-7-000-jobs-amid-financial-crisis-report-8542232

সানজানা

×