ছবি: সংগৃহীত।
অনেক সময় আমাদের হাতে কিছু বাড়তি টাকা থাকে—হয়তো এক লাখ, দুই লাখ, কিংবা সাত-আট লাখ এমনকি ১০ লাখ টাকার মতো। এই অর্থ হয়তো আমরা ভবিষ্যতের কোনো খরচের জন্য জমা রেখেছি, তবে ঠিক কখন তা প্রয়োজন হবে তা জানা নেই। এমন অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে—এই স্বল্পমেয়াদি অর্থ কোথায় রাখা সবচেয়ে ভালো? কোথায় রাখলে টাকা নিরাপদ থাকবে আবার কিছু মুনাফাও আসবে? বিশেষ করে যারা শরিয়া-সম্মত উপায়ে বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্যও রয়েছে কিছু কার্যকর বিকল্প।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের অর্থ যেকোনো সময় প্রয়োজন হতে পারে বলে সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে ব্যাংকের এমটিডিআর (MTDR) বা টার্ম ডিপোজিট। এক মাস থেকে শুরু করে তিন মাস মেয়াদি এই ডিপোজিটে টাকা রাখা যায়। প্রয়োজন হলে মাঝপথেও টাকা তুলে নেওয়া সম্ভব। এছাড়া শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংকেও রয়েছে এই সুবিধা, যেখানে সুদের বদলে গ্রাহক মুনাফা পান।
এমটিডিআরের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—টাকা তুলতে কোনো জটিলতা নেই এবং টাকা যতদিন সেখানে থাকবে, ততদিনের জন্য মুনাফা হিসেব করে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, বাসায় নগদ অর্থ রেখে মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা না নিয়ে এই ডিপোজিট একটি নিরাপদ ও লাভজনক বিকল্প।
অন্যদিকে, যাদের টাকা কিছুটা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য হাতে আছে, তারা চাইলে সোনা, শেয়ারবাজার বা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।
সোনায় বিনিয়োগ করলে একদিকে যেমন মুদ্রার দরপতনের সময়ও সম্পদের মান রক্ষা করা যায়, অন্যদিকে সামাজিক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনেও এটি কাজে লাগে। গত দুই বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে সোনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে এর একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা এবং বিক্রির সময় লাভজনক দাম পাওয়া—সাধারণত ১৫-২০% বাট্টা দিতে হয়।
বন্ড ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে থাকতে হবে ধৈর্যশীল। সরকারি ট্রেজারি বন্ড ও সঞ্চয়পত্রে এখন পর্যন্ত ভালো রিটার্ন মিললেও শরিয়া ভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি উপযুক্ত নয়। তাদের জন্য রয়েছে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী পরিচালিত কিছু কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের সুযোগ। তবে এই বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি, তাই ভালোভাবে যাচাই করে এবং দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা করে তবেই এগোতে হবে।
সিদ্ধান্ত আপনার—
আপনার হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ ও সময়সীমার ওপর নির্ভর করে বেছে নিতে হবে বিনিয়োগের পথ। স্বল্পমেয়াদি হলে এমটিডিআর, দীর্ঘমেয়াদে হলে সোনা কিংবা শেয়ারবাজার হতে পারে ভালো বিকল্প। তবে নিরাপত্তা ও শরিয়াহ সম্মত দিক বিবেচনায় রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
নুসরাত
