ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগের সম্পর্ক উন্নয়নে ঐকমত্য পোষণ করেছে ডেনমার্ক

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ১২ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:২৭, ১২ মে ২০২৫

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগের সম্পর্ক উন্নয়নে ঐকমত্য পোষণ করেছে ডেনমার্ক

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগের সম্পর্ক উন্নয়ন করার ঐকমত্য পোষণ করেছে ডেনমার্ক ও বাংলাদেশ। এছাড়া রাজনৈতিক সহযোগিতা, উন্নয়ন সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, সবুজ অর্থনীতি ও ন্যায্য রূপান্তর, সমুদ্র বিষয়ক অর্থনীতি কাছে লাগানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছে দুই দেশ। 

সোমবার বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে অনুষ্ঠিত তৃতীয় রাজনৈতিক কনসালটেশন বৈঠকে দুই দেশ এই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আলোচনার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠানো থেকে দেয়া যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি রাজনৈতিক আলোচনা ছাড়াও কীভাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগানোর লক্ষ্যে দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নে ডেনমার্কের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করার পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশটি।

ডেনিস বাংলাদেশের যৌথ আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ এবং ইইউ) আবুল হাসান মৃধা এবং ডেনমার্কের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া, ওশেনিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান বিষয়ক মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত থমাস লুন্ড-সোরেনসেন।

রাজনৈতিক পরামর্শ সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং ডেনমার্কের ডেনমার্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম শহীদুল করিম এবং বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার তাদের নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে সভায় অংশগ্রহণ করেন।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় উভয়পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ এবং অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে স্থায়ী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পুনর্ব্যক্ত করে। তারা ২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফার পরামর্শের পর থেকে অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং ভবিষ্যতে আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য নতুন পথ অনুসন্ধান করে।

আলোচনায় বিশেষ কমিটি গঠন ছাড়াও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা করার ঘোষণা দেন ডেনমার্ক। 

দুটি প্রতিনিধি দল রাজনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, সবুজ ও ন্যায্য রূপান্তর, সমুদ্র বিষয়ক, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জনগণের সাথে জনগণের যোগাযোগ এবং পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলোর ওপর ফলপ্রসূ এবং বিস্তৃত আলোচনা করে।

সভায় শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়সংগত বাংলাদেশের দিকে উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করার জন্য ডেনমার্ক তার অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ডেনিশ পক্ষ জলবায়ু কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক সবুজ কৌশলগত অংশীদারিত্ব কাঠামোর অধীনে অব্যাহত সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছে।

বাংলাদেশ ডেনমার্কের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে সুশাসন, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্র খাতে। উভয়পক্ষ জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা, নীল অর্থনীতি এবং সবুজ প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণে সম্মত হয়েছে।

উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বাজার প্রবেশে সহজতর এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচারের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ।

২০২৯ সালের পরেও ইইউর জিএসপি প্লাস সুবিধা থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ডেনমার্কের সমর্থন চেয়েছে।

সভায় অ্যাকাডেমিক সহযোগিতা, বৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বিনিময় ছাড়াও পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে উভয়পক্ষ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। 

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য ডেনমার্ক তাদের অব্যাহত মানবিক সহায়তা পুনর্ব্যক্ত করেছে। উভয়পক্ষ তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিষয়ে মতবিনিময় করেছে এবং শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক সংহতির প্রতি তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

×